Top Newsআন্তর্জাতিক

পাকিস্তানে ট্রেনে জিম্মি সংকটের সমাধান, নিহত ২৮ সৈন্য

পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে বোমা হামলা চালিয়ে জিম্মি করা ট্রেনের সব যাত্রীকে উদ্ধার করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। দুদিনের অভিযানে ট্রেনের প্রায় সাড়ে ৩০০ যাত্রী উদ্ধার হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

দেশটির সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সন্ত্রাসীদের জিম্মি করা ট্রেনের সব যাত্রীকে মুক্ত করা হয়েছে। এ সময় সেনাবাহিনীর অন্তত ২৮ সৈন্য নিহত হয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ট্রেনের জিম্মি ৩৪৬ যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে ৩৩ জন সন্ত্রাসীও নিহত হয়েছেন। জিম্মি করা ট্রেনে দায়িত্ব পালনরত ২৭ সৈন্যকে সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছেন; যারা ওই ট্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া অভিযান পরিচালনার সময় অপর এক সেন্য নিহত হয়েছেন।

বুধবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার পর বেলুচিস্তানে অভিযান শুরু করা হয়েছিল। একদিন আগে শুরু হওয়া অভিযান বুধবার শেষ হয়েছে। অভিযানে ট্রেনের সব যাত্রীকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ট্রেনে উপস্থিত সব সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন।

দেশটির একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘প্রদেশের বোলান এলাকায় ১১ মার্চ দুপুর ১টার দিকে সন্ত্রাসীরা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একটি রেলপথ উড়িয়ে দিয়েছিল। বিস্ফোরণের পরপরই জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটি থেমে যায়। রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, ট্রেনে প্রায় ৪৪০ জন যাত্রী ছিলেন।’’

এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে দেশটির বেলুচিস্তান প্রদেশের কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়ার পেশওয়ারের উদ্দেশে যাওয়ার সময় ট্রেনটিতে হামলা চালায় সশস্ত্র বন্দুকধারীরা। বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার দাবিতে কয়েক দশক ধরে আন্দোলন করে আসা সশস্ত্র গোষ্ঠী দ্য বেলুচ লিবারেশন আর্মি ট্রেনে হামলার দায় স্বীকার করে।

অভিযানের বিষয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, সড়ক নেটওয়ার্ক থেকে অনেক দূরে হওয়ায় ঘটনাটি যে অঞ্চলে ঘটেছিল, সেখানে পৌঁছানো কঠিন ছিল। সন্ত্রাসীরা নারী ও শিশুদেরসহ জিম্মিদের ব্যবহার করে মানবঢাল তৈরি করেছিল। পরে সেখানে জিম্মিদের উদ্ধারে তাৎক্ষণিকভাবে সামরিক অভিযান শুরু করা হয়।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, ফ্রন্টিয়ার কর্পস এবং এসএসজি কর্মীরা এই অভিযানে অংশ নেন। পরে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করে ট্রেনের জিম্মি যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়।

‘‘অভিযানের সময় এই সন্ত্রাসীরা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে আফগানিস্তানে তাদের সমর্থক ও মাস্টারমাইন্ডদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। গতকাল সন্ধ্যায় সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে প্রায় ১০০ যাত্রীকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছিল এবং আজ বাকি যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়েছে।’’

তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর স্নাইপাররা আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের হত্যা করে একের পর এক বগিতে প্রবেশ করেন। তারা ট্রেনের সব সন্ত্রাসীকে হত্যার পর যাত্রীদের উদ্ধার করেন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button