গাজা উপত্যকায় এবার নতুন করে ‘স্থল অভিযান’ শুরু করেছে ইসরাইলি বাহিনী। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নেতজারিম করিডোরের একটি অংশ পুনর্দখল করেছে তারা। হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর ইসরায়েল অবরুদ্ধ উপত্যকাজুড়ে ব্যাপক বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। বার্তা সংস্থা এপি’র বরাত দিয়ে এনডিটিভি এ খবর জানায়।
বুধবার (২০ মার্চ) সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের বাহিনী কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান পুনরায় শুরু করেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের মতে, টানা দ্বিতীয় দিনের বিমান হামলায় কমপক্ষে ৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার নতুন করে শুরু হওয়া হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ৪৩৬ ফিলিস্তিনি, যার মধ্যে ১৮৩ জনই শিশু। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে সংঘাত শুরুর পর থেকে অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে নতুন এই হামলা। এই হামলা কার্যত জানুয়ারি থেকে কার্যকর থাকা যুদ্ধবিরতি চূর্ণ করেছে।
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস এই স্থল অভিযান এবং নেটজারিম করিডোরে প্রবেশকে ‘নতুন এবং গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে। এক বিবৃতিতে হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে।
হামাস বলেছে, তারা জানুয়ারি মাসে স্বাক্ষরিত মূল যুদ্ধবিরতি চুক্তিতেই অটল। এই চুক্তি অনুযায়ী, দুই পক্ষের মধ্যে বন্দি বিনিময়, যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ করা এবং ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার নিশ্চিত করার কথা ছিল।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধানের গণমাধ্যম উপদেষ্টা তাহের আল-নোনো আল জাজিরাকে বলেন, ‘একটি স্বাক্ষরিত চুক্তি থাকা সত্ত্বেও কেন নতুন প্রস্তাব আনা হচ্ছে? জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবও রয়েছে। আমরা ইতিবাচকভাবে সব প্রচেষ্টার প্রতি সাড়া দিয়েছি। তবে এটি নেতানিয়াহুই বাতিল করেছেন এবং এর দায় তাকেই নিতে হবে।’
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বুধবার (১৯ মার্চ) হুমকি দিয়ে বলেন, ‘যদি সব বন্দি মুক্ত না করা হয় এবং হামাসকে নির্মূল না করা হয়, তাহলে ইসরায়েল এমন মাত্রার আক্রমণ চালাবে, যা আগে কখনো দেখা যায়নি।’
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় বহু মানুষ নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে জাতিসংঘের একটি সংস্থার এক বিদেশি কর্মীও রয়েছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন এবং জাতিসংঘ কর্মীদের ওপর সমস্ত হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ নিয়ে গাজায় নিহত জাতিসংঘ কর্মীর সংখ্যা ২৮০ জনে পৌঁছেছে।



