
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ২০১৬ সালের বাংলাদেশ সফরে ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক ‘কৌশলগত সহযোগিতায়’ উন্নীত হয়। ওই সফরে পদ্মা সেতুর রেলসংযোগ, কর্ণফুলী টানেলসহ ২৭টি অবকাঠামো প্রকল্পে চীন ২ হাজার কোটি ডলার অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসব প্রকল্পের মধ্যে ৯টি প্রকল্পের ঋণচুক্তি সম্পন্ন হলেও, ছাড় হয়েছে মাত্র ৫২০ কোটি ডলার, যা প্রতিশ্রুত অর্থের ২৫%।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, প্রতিশ্রুত ২৭টি প্রকল্পের মধ্যে ৩০% কাজ এগিয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির অন্যতম কারণ হিসেবে চীনা একক ঠিকাদারি পদ্ধতিকে দায়ী করা হচ্ছে, যেখানে বাণিজ্যিক চুক্তি চূড়ান্ত করতেই দুই থেকে আড়াই বছর লেগে যায়।
এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ২০২৩ সালের শেষ দিকে চীনের কাছে নতুন একটি প্রস্তাব দেয়। এতে বলা হয়, একক ঠিকাদারের পরিবর্তে একাধিক ঠিকাদার দরপত্রে অংশ নিতে পারবে। প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া চালু হলে কাজের গতি বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের সরকারি সফরে গতকাল চীনের হাইনানে পৌঁছেছেন। সফরের অংশ হিসেবে তিনি আজ বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন এবং আগামীকাল বেইজিংয়ে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ বৈঠকে তিনি প্রতিশ্রুত ঋণের দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২৭টি প্রকল্পের মধ্যে বর্তমানে ৬টি প্রকল্পের কাজ চলমান, যার মধ্যে রয়েছে:
– পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগ
– মহেশখালী-চট্টগ্রাম জ্বালানি পাইপলাইন
– বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন উন্নয়ন
– ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে
– দাসেরকান্দি পয়োনিষ্কাশন প্রকল্প
ইতিমধ্যে কর্ণফুলী নদীর নিচে টানেল নির্মাণ, জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চীনের ঋণ বাস্তবায়নের গতি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এখন দেখার বিষয়, বেইজিং কতটা দ্রুত এ প্রস্তাবে সাড়া দেয়।