
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস আন্দোলনের জেরে ৩২৭ জন বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। শুধু ভিসা বাতিলই নয়। ওই ৩২৭ জন পড়ুয়া ‘রাষ্ট্রদোহী’ তকমা দিয়েছে ট্রাম্প সরকার।
এই শিক্ষার্থীদের অনেকেই গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ও ফিলিস্তিনের সপক্ষে ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। অন্যরা ভিসা বাতিল বা গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন ফিলিস্তিনের সঙ্গে পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট থাকায় কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গাজার প্রতি সমর্থন জানানোর কারণে।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, এই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসগুলোতে ইহুদিবিরোধিতা ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন শিক্ষার্থী, আইনজীবী ও অধিকারকর্মীরা। অথচ গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত অনেক বড় বিক্ষোভেই সম্মুখসারিতে ছিলেন ইহুদি অধিকারকর্মী ও বিভিন্ন সংগঠন।
কোনো কোনো শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে আইন লঙ্ঘনের ছোটখাটো ঘটনায়, যেমন টিকিট বা ট্র্যাফিক–সংক্রান্ত নিয়মকানুন লঙ্ঘনের দায়ে।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও বলেছিলেন, ‘বিদেশি শিক্ষার্থীরা কী করছেন, সে দিকে আমরা প্রতি দিন কড়া নজর রাখি। তিনশোরও বেশি এ ধরনের পাগল রয়েছেন। আমি তাদের ভিসা কেড়ে নেব। প্রতিটা দেশেরই ঠিক করার অধিকার আছে যে, কে সে দেশে থাকবেন, কে নয়।’
গত মার্চের শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, প্রশাসন প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। তবে এ সংখ্যা তাঁর দেওয়া পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি।
এ নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের পরিসংখ্যানে পার্থক্য রয়েছে। ভিসা বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ সংখ্যার তথ্য দিয়েছে ‘আমেরিকান ইমিগ্রেশন ল ইয়ারস অ্যাসোসিয়েশন’। তাদের হিসাবমতে, মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট পরিচালিত ‘স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেমস (এসইভিআইএস)’ নামের তথ্যভান্ডার থেকে ৪ হাজার ৭০০–এর বেশি শিক্ষার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এমনকি অধিকতর রক্ষণশীল হিসাবেও এ সংখ্যা এক হাজারের বেশি বলে উল্লেখ করা হয়। দ্য ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ফরেন স্টুডেন্ট অ্যাডভাইজারসের (এনএএফএসএ) অনুমান, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির মুখে রয়েছেন ১ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী।
আবার উচ্চশিক্ষা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রকাশনা ‘ইনসাইড হাইয়ার এড’–এর তথ্য অনুযায়ী, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত ১ হাজার ৪৮৯ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে।