আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের বাঁধ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ, সীমান্তে প্রতিনিধিদল

মোহনা অনলাইন

বন্যা মোকাবিলার আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভারতের সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের মুহুরী নদীতে নতুন করে বাঁধ নির্মাণ করছে বাংলাদেশ। মূলত মুহুরী নদীর ধারে বাংলাদেশের তৈরি করা একটি নতুন বাঁধকে ঘিরেই তৎপর ভারতীয় ওই প্রতিনিধিদল। সোমবার (২১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সোমবার (২১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি, দ্য হিন্দুসহ বেশকিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রোববার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বেলোনিয়া সীমান্ত শহর পরিদর্শন করেছে ভারতের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। মুহুরী নদীর ধারে বাংলাদেশের তৈরি করা একটি নতুন বাঁধ ভারতীয় অঞ্চলে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে—তা সরেজমিনে দেখতে ও মূল্যায়ন করতেই তারা সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বলেও এতে দাবি করা হয়েছে।

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের গণপূর্ত (পিডব্লিউডি) বিভাগের সচিব কিরণ গিট্টে। তিনি বেলোনিয়া শহর ও আশপাশের সীমান্ত এলাকাগুলো ঘুরে দেখেন, স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বেলোনিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যানও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শনের পর কিরণ গিট্টে জানান, দক্ষিণ ত্রিপুরার সদর বেলোনিয়া এবং আশপাশের গ্রামগুলোকে সুরক্ষা দিতে ভারত সরকার নিজেও বাঁধ নির্মাণ এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই মেরামত ও নির্মাণের সব কাজ শেষ হবে। কাজ চলবে ২৪ ঘণ্টা ধরে।’

তিনি আরও জানান, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় কাজের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত পাঁচজন প্রকৌশলী সেখানে নিয়োগ দেওয়া হবে।

২০২৪ সালের আগস্টে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে মুহুরী নদীর পাড়ঘেঁষে নির্মিত বহু বাঁধ ও অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকার ইতোমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ৪৩টি ক্ষতিগ্রস্ত স্থান চিহ্নিত করেছে, যার মধ্যে দক্ষিণ ত্রিপুরাও রয়েছে।

এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে বলে জানান গিট্টে। পরিদর্শনের সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

এনডিটিভি বলছে, দক্ষিণ ত্রিপুরার বেলোনিয়া শহরের বিপরীতে বাংলাদেশের নির্মিত নতুন বৃহৎ বাঁধটি নিয়ে ভারতীয় সীমান্তবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। তাদের আশঙ্কা, বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বাড়লে এই বাঁধ ভারতের অভ্যন্তরীণ গ্রামগুলোতে জলাবদ্ধতা বা বন্যা সৃষ্টি করতে পারে।

বেলোনিয়া পৌর এলাকা, বল্লামুখ, ঈশান চন্দ্রনগরসহ দক্ষিণ ত্রিপুরার একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা এই নতুন বাঁধের কারণে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন বলে মনে করছেন।

এর আগেও উত্তর ত্রিপুরার উনাকোটি জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় একইভাবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। সেই বাঁধের কারণে বর্ষার সময় কৈলাশহর শহর ও আশপাশের গ্রামগুলোতে প্লাবনের আশঙ্কা বাড়ছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button