টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী মাস থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ (DOGE) প্রকল্পে সময় কম ব্যয় করবেন এবং টেসলায় আরও বেশি মনোযোগ দেবেন। কারণ, কোম্পানিটি ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে টেসলার মুনাফা ৭১ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪০৯ মিলিয়ন ডলারে। প্রতি শেয়ারে আয় হয়েছে মাত্র ১২ সেন্ট। এছাড়া কোম্পানির রাজস্বও ৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯.৩ বিলিয়ন ডলারে, যা বাজার বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের তুলনায় অনেকটাই কম।
এই পতনের পেছনে মাস্কের DOGE প্রকল্পে সম্পৃক্ততাকেও অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই ভূমিকার কারণে টেসলার ব্র্যান্ড ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার আয়-প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক বিনিয়োগকারী সম্মেলনে মাস্ক বলেন, “সম্ভবত মে মাস থেকেই ডজের পেছনে আমার সময় বরাদ্দ অনেকটাই কমে যাবে। তবে সরকারি বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সপ্তাহে এক-দুদিন এই প্রকল্পে সময় দিতে হতে পারে, যাতে দুর্নীতি ও অপচয় আবার ফিরে না আসে—কারণ সুযোগ পেলেই ওগুলো ফিরে আসতে চায়।”
তিনি জানান, DOGE প্রকল্পের প্রাথমিক কাঠামোগত কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। তাই এখন থেকে টেসলার কার্যক্রমে তিনি আরও সক্রিয় থাকবেন।
উল্লেখ্য, ইলন মাস্কের সরকারি উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ আগামী ৩০ মে শেষ হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বেশ কিছু ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন মাস্কের মেয়াদ আর না বাড়ানো হয় এবং তিনি প্রশাসন থেকে সরে আসেন।
মাস্কের এই সরকারি ভূমিকা ইতিমধ্যেই সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে যখন তিনি প্রশাসনে ব্যাপক ব্যয় সংকোচন ও নিয়োগ ছাঁটাই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
এদিকে, টেসলার দুর্বল পারফরম্যান্স নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আটজন ডেমোক্র্যাট অঙ্গরাজ্যের ট্রেজারার। তারা টেসলার বোর্ড চেয়ারম্যান রবিন ডেনহোলমকে চিঠি দিয়ে বলেন, “সিইও ইলন মাস্ক একাধিক কোম্পানি ও সরকারি দায়িত্বের সঙ্গে যুক্ত থাকায় টেসলার বর্তমান সংকটে নেতৃত্ব কতটা মনোযোগী তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।”
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এই পরিস্থিতি টেসলার নেতৃত্বে গভীর দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়, যার প্রভাব তাদের রাজ্যগুলোর বিনিয়োগেও পড়তে পারে।
এমন এক সময়েই মাস্ক বলেন, “আমার বিশ্বাস, এখন সঠিক কাজ হলো দুর্নীতি ও অপচয়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের স্বার্থে কাজ করা। কারণ আমেরিকা যদি ডুবে যায়, তাহলে আমরা সবাই, টেসলাসহ ডুবে যাব।”



