জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক চরমভাবে উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শন ও আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ভারত এখন সংঘাত এড়ানোর চেষ্টা নয়, বরং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মির হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য আন্তর্জাতিক সমর্থন অর্জন নয়, বরং সম্ভাব্য সামরিক অভিযানকে বৈধতা দেওয়ার প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, কাশ্মিরে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে এবং হামলায় জড়িতদের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান জোরদার করা হয়েছে। সীমান্ত অঞ্চলে কয়েক রাত ধরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। একই সঙ্গে ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) সংক্রান্ত যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতি ২০১৯ সালের তুলনায় আরও অনিশ্চিত। হামলার দায় স্বীকার করেছে “রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট” নামের একটি অজ্ঞাত গোষ্ঠী, তবে এর প্রকৃতি নিয়ে বিভ্রান্তি রয়ে গেছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা একে লস্কর-ই-তৈয়বার ছায়া সংগঠন হিসেবে সন্দেহ করছেন, যদিও এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, উভয় দেশই নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে আগ্রহী হলেও, পরমাণু অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশীর সংঘর্ষ দ্রুত ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। যদিও অনেকে আশা করছেন, উভয়পক্ষ সংঘাতকে নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করবে, তবে উত্তেজনার মাত্রা যেকোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।



