ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার মানুষের জন্য খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী বহনকারী একটি জাহাজে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে দক্ষিণ ইউরোপের দেশ মাল্টার আন্তর্জাতিক জলসীমায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন (ট্রিপল এফ) গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য এই ত্রাণ পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। হামলায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া না গেলেও জাহাজটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১২টার দিকে মাল্টার আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রমের সময় আমাদের ত্রাণবাহী জাহাজে সরাসরি হামলা চালানো হয়। দু’টি সশস্ত্র ড্রোন জাহাজটির সামনের অংশে আঘাত হানে, যার ফলে সেখানে আগুন ধরে যায় এবং একটি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়।”
তারা আরও জানায়, “জাহাজটি সম্পূর্ণ বেসামরিক ও নিরস্ত্র ছিল। এতে গাজার জন্য খাবার, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বহন করা হচ্ছিল। এছাড়াও ট্রিপল এফ-এর কয়েকটি সদস্য দেশের প্রতিনিধিরাও এতে ছিলেন। এ ধরনের হামলায় বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারত।”
বিবৃতিতে ইসরায়েলের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় বেসামরিক নৌযান লক্ষ্য করে হামলা চালানো আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। আমরা মাল্টা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই— তারা যেন ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ হামলার জবাবদিহিতা চায়।”
মাল্টা সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “হামলায় জাহাজের মূল ইঞ্জিন ও জেনারেটর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আগুন ধরে গেলেও রাত ১টা ২৮ মিনিটের দিকে মাল্টার নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহায়তায় তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।”
জাহাজটিতে মোট ১২ জন ক্রু ও ৪ জন বেসামরিক যাত্রী ছিলেন। তাদের সবাই নিরাপদে রয়েছেন এবং রাত ২টা ১৩ মিনিটে তাদের মাল্টার বন্দরে নিয়ে আসা হয়েছে। জাহাজটি এখনও আন্তর্জাতিক জলসীমায় রয়েছে এবং কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে রয়েছে।
হামলা সম্পর্কে জানতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও মন্ত্রিসভার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বার্তা সংস্থা এএফপি, তবে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
উল্লেখ্য, প্রায় দু’মাসের যুদ্ধবিরতি শেষে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এর আগে, ২ মার্চ থেকে গাজায় সব ধরনের ত্রাণবাহী ট্রাকের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে ইসরায়েল, যা এখনও বহাল রয়েছে।



