
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতেই হবে, তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে তারা ফিরবে না। চলমান গৃহযুদ্ধ, অভ্যন্তরীণ বিভাজন এবং নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তার অভাবের কারণে এখনই প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা সুদূরপরাহত।
রোববার (৪ মে) বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) আয়োজিত “বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন: আঞ্চলিক নিরাপত্তার উপর প্রভাব এবং ভবিষ্যৎ” শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
তৌহিদ হোসেন বলেন, “রোহিঙ্গা সংকটের এখনও কার্যকর সমাধান নেই। প্রত্যাবাসনের জন্য দুটি বিষয়—অধিকার ও নিরাপত্তা—অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো নিশ্চিত না হলে প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়। আমরা কোনো অযৌক্তিক প্রত্যাশা করছি না। যেখান থেকে তারা নির্যাতনের মুখে পালিয়ে এসেছিল, সেখানে ফেরত পাঠানো কি যুক্তিসঙ্গত?”
তিনি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার কার্যকারিতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন। বলেন, “মিয়ানমারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলা দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো বাস্তব ফল আসেনি। একজন রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি। তাই কেবল দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির ওপর নির্ভরতা ব্যর্থ হয়েছে।”
উপদেষ্টা বলেন, “মিয়ানমারে বাস্তব পরিবর্তন আনতে হবে এবং তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হতে হবে। এটি কঠিন ও দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংকট থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেওয়া ঠেকাতে হবে। প্রত্যাবাসনের জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ থাকা জরুরি।”
মিয়ানমারের রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সেখানে কখনোই প্রকৃত গণতন্ত্র ছিল না। অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকারও ছিল আধা-সামরিক। বর্তমানে দেশটি পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধে জর্জরিত। সেখানে প্রধান তিন পক্ষ—সামরিক জান্তা, আরাকান আর্মি এবং জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি)—এদের সবাইকে যেকোনো স্থায়ী সমাধানে যুক্ত করতে হবে, বিশেষ করে আরাকান আর্মিকে, যারা বর্তমানে রাখাইনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”