
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাবন্দি ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আরও চারটি মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এতে করে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাসহ মোট পাঁচটি মামলায় তিনি এখন গ্রেফতার দেখানো আসামি।
মঙ্গলবার (৬ মে) চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিনের আদালতে চার মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত আবেদনগুলো মঞ্জুর করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শুনানির সময় চিন্ময়কে কারাগার থেকে ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির করা হয়।
এর আগে সোমবার (৫ মে) আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময়কে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। ওই মামলায় নিহত আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।
চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার আরও চার মামলায় মঙ্গলবার গ্রেফতার দেখানোর আদেশ আসে, যার মধ্যে রয়েছে—পুলিশের ওপর হামলা, কর্তব্যে বাধা, আদালত প্রাঙ্গণে ত্রাস সৃষ্টি এবং বিস্ফোরক আইনে মামলা। একটি মামলার বাদী নিহত আলিফের ভাই।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশের পরদিন আদালত প্রাঙ্গণে তার অনুসারীরা বিক্ষোভ ও তাণ্ডব চালায়। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে প্রিজন ভ্যান অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে। এতে ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে এবং লালদিঘী পাড় থেকে কোতোয়ালী পর্যন্ত উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পাশাপাশি পুলিশের ওপর হামলা, বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণসহ ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়।
উল্লেখ্য, ৩০ এপ্রিল রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পান চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। তবে জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার জজ আদালতে আপিল করেছে।