ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটক হত্যাকাণ্ড ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার রেশ না কাটতেই আজ বুধবার ভোররাতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাঞ্জাব সীমান্ত এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পরিস্থিতি ঘিরে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে, আর তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিভিন্ন দেশের নেতারা।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, ‘কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তজুড়ে ভারতের সামরিক অভিযান নিয়ে মহাসচিব অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তিনি উভয় দেশকে ধৈর্য ধরার ও সামরিক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। বিশ্ব ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের জন্য প্রস্তুত নয়।’
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এটি লজ্জাজনক, আমরা মাত্র এই ঘটনার কথা শুনলাম। আমার মনে হয় মানুষ বুঝতে পারছিল যে কিছু একটা ঘটতে চলেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছে। আমি আশা করি এটি খুব দ্রুত শেষ হবে।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ‘এক্স’–এ দেওয়া বার্তায় জানান, তিনি ভারত-পাকিস্তানের চলমান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য ওয়াশিংটন তার ভূমিকা পালন করবে।’
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি বলেন, ‘কাশ্মীরে ২২ এপ্রিলের জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। তবে এই ঘটনার জেরে দুই দেশের মধ্যে প্রতিশোধমূলক হামলা এবং পূর্ণমাত্রার সংঘাতের আশঙ্কায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আমরা উভয় দেশকে সংযমী ও আলোচনাপ্রবণ হওয়ার আহ্বান জানাই।’
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান প্রতিবেশী—এদের দূরে সরানো সম্ভব নয় এবং তারা চীনেরও প্রতিবেশী। আমরা সব ধরনের জঙ্গি কার্যক্রমের বিরোধিতা করি। একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থান, সংযম প্রদর্শন এবং উত্তেজনা বাড়াতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য আমরা উভয় দেশকে আহ্বান জানাই।’
ইসরায়েলে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত রিউভেন আজার বলেন, ‘ইসরায়েল ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে। জঙ্গিদের জানা উচিত, নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য হামলা চালিয়ে তারা কোথাও নিরাপদে পালিয়ে থাকতে পারবে না।’
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বাখো ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেল টিএফওয়ান-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি যে ভারত ধারাবাহিক জঙ্গি হামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চায়। তবে একই সঙ্গে আমরা ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই ধৈর্য ধরার ও বেসামরিক মানুষের সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানাই।’



