দুই যুগ আগে রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে রায় ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রায়ের আদেশ অংশ ঘোষণার জন্য আগামী মঙ্গলবার (১৩ মে) দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা শুরু করেন। দুপুর একটার দিকে আদালত জানান, রায়ের সিদ্ধান্ত অংশ আগামী মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার জানান, এজাহার, অভিযোগ ও সাক্ষ্য পর্যালোচনা করে রায় পাঠ শুরু হয়েছে। তবে চূড়ান্ত আদেশ পরে জানানো হবে।
আদালত এদিন শুনানির শুরুতে বলেন, “আজ ঘটনার বিশ্লেষণ ও সাক্ষ্য পর্যালোচনা করা হবে, আদেশ অংশ পরে।” আসামিপক্ষের আইনজীবী এস এম শাহজাহান তখন জানতে চান, ‘তাহলে আদেশ অংশ আজ হচ্ছে না?’ আদালত জবাবে বলেন, ‘না, আজ হচ্ছে না।’
উল্লেখ্য, হাইকোর্টে শুনানি শেষে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়। এরপর গত ৩০ এপ্রিল মামলাটি রায়ের জন্য কার্যতালিকায় ওঠে এবং ৮ মে দিন নির্ধারণ করা হয়।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখের সকালে রাজধানীর রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ভয়াবহ বোমা হামলা হয়। ঘটনাস্থলে ৯ জন নিহত হন এবং পরে হাসপাতালে মারা যান আরও একজন।
২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে সিলেটে গ্রেনেড হামলা মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন: আকবর হোসেন, আরিফ হাসান, তাজউদ্দিন (সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই), হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমান।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আবদুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। কারাগারে থাকা আসামিরাও জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। এসব শুনানি শেষে মামলাটি ২০২3 সালের ৮ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বর্তমান বেঞ্চে ওঠে এবং পর্যায়ক্রমে রায় ঘোষণার পর্ব শুরু হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান, সরওয়ার আহমেদ, শিশির মনির ও যায়েদ বিন আমজাদ।



