দমন-পীড়ন ও পাল্টাপাল্টি রেষারেষিতে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকা পাকিস্তানের রাজনীতিতে এসেছে এক নাটকীয় মোড়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের আলোচনার প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন প্রধান বিরোধী নেতা ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের পক্ষ থেকে দেওয়া আলোচনার প্রস্তাব কারাবন্দি ইমরান খানের কাছে পৌঁছে দেন পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর আলী খান। আদিয়ালা জেলে সাক্ষাতের সময় ইমরান খান আলোচনা করার অনুমতি দেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
তবে ইমরান খান স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আলোচনাটি হতে হবে গোপনীয়ভাবে, গণমাধ্যমের নজরের বাইরে। পিটিআই-এর পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, এবারের আলোচনা হবে অনেক বেশি কৌশলী ও নিরবভাবে। দলটির ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, আগের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল অতিরিক্ত প্রচারের কারণে। এবার তারা চান টেকসই ও বাস্তবসম্মত আলোচনার পরিবেশ তৈরি হোক।
ব্যারিস্টার গওহর দ্য নিউজকে বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব ইমরান খানের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। তবে আমাদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে, তা বলতে পারি না।”
এর আগে জাতীয় পরিষদে দেওয়া এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ পিটিআইকে জাতীয় সংলাপে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। ব্যারিস্টার গওহর সেই প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও পিটিআই জানিয়ে দেয়, ইমরান খানের সম্মতি ছাড়া কোনও অগ্রগতি সম্ভব নয়।
দলের ভেতরের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইমরান খান চান আলোচনায় সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন থাকুক। এমনকি প্রয়োজনে তিনি সেনাবাহিনীর একজন প্রতিনিধির সঙ্গেও বৈঠকে বসতে প্রস্তুত।
এই আলোচনার উদ্যোগ এমন সময় এসেছে, যখন ভারতের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানে রাজনৈতিক ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা নতুন করে জোরালোভাবে সামনে এসেছে। দেশজুড়ে সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক, জাতীয় নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
তবে এই পর্দার আড়ালের আলোচনা কতদূর এগোবে এবং তা কোনো দীর্ঘমেয়াদি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে কি না— সেটাই এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।