
ইসরায়েল গাজা উপত্যকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সোমবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু টেলিগ্রামে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “লড়াই চলছে তীব্রভাবে এবং আমরা অগ্রগতি করছি। আমরা পুরো গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণে নেব। আমরা হাল ছাড়ব না। সফল হতে হলে এমনভাবে কাজ করতে হবে, যা থামানো যাবে না।”
সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান আরও তীব্র হয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস ও আশপাশের এলাকায় ‘অভূতপূর্ব হামলার’ আশঙ্কায় স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনী সোমবার ‘অপারেশন গিডিওন চ্যারিওটস’ নামে একটি নতুন অভিযান শুরু করেছে। অভিযানের লক্ষ্য হামাসকে নির্মূল করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা। সেনাবাহিনীর দাবি, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় অন্তত ১৬০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। এদিকে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, শুধু সোমবারের বিমান হামলায় কমপক্ষে ৫২ জন নিহত হয়েছেন।
গাজার স্থানীয় চিকিৎসাকর্মীদের বরাতে জানা গেছে, রোববার রাতভর অভিযানে আরও অন্তত ২০ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
নেতানিয়াহু জানান, ইসরায়েল এ মাসের শুরুতে গাজায় একটি বিস্তৃত সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যার লক্ষ্য অঞ্চলটি দখল করা এবং সেখানে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া। তবে এই অবস্থানে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে ইসরায়েল, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র রাষ্ট্রগুলো খাদ্য সংকট ও মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে গাজার ওপর আরোপিত অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা গাজার জনগণকে ক্ষুধায় মারা যেতে দিতে পারি না। এটি বাস্তবিক ও কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি ইসরায়েলের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও গণহারে ক্ষুধার চিত্র সহ্য করবে না।”
ইসরায়েল ২ মার্চ থেকে গাজায় অবরোধ আরোপ করেছে, যার উদ্দেশ্য হামাসকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। তবে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা খাবার, পানি, জ্বালানি ও ওষুধের সংকটের বিষয় নিয়ে সতর্ক করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস বলেন, ‘২০ লাখ মানুষ ক্ষুধায় কষ্ট পাচ্ছে, অথচ সীমান্তে কয়েক মিনিটের দূরত্বে টন টন খাবার আটকে আছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মানবিক সাহায্য ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখায় গাজায় ক্ষুধার ঝুঁকি বাড়ছে। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেন, ‘অনেক মানুষ ক্ষুধার্ত’ এবং বলেন, ‘আমরা এটা ঠিক করব।’