নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এশিয়ার দেশগুলোকে অভিন্ন সংকট মোকাবিলা এবং নতুন সম্ভাবনার পথ উন্মোচনে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এশিয়া আজ বৈচিত্র্যময় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্যে এগিয়ে চলেছে, এবং এই বৈচিত্র্য আমাদের শক্তি। তাই টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত ‘নিক্কেই ফোরাম: এশিয়ার ভবিষ্যৎ ৩০তম সম্মেলন’-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ইউনূস সাতটি দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি অভিন্ন ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, যা যেন সবার জন্য সমানভাবে সমৃদ্ধ হয়—এটি নিশ্চিত করতে হবে। দেশগুলোকে একে অপরের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে সহযোগিতায় রূপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ইউনূস অর্থনীতি, প্রযুক্তি ও বাণিজ্যের জোট গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এ অঞ্চল এখনও বাণিজ্যিকভাবে বিশ্বের অন্যতম কম সংযুক্ত। আমাদের এখনই উদ্যোগ নিতে হবে যেন বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। তিনি একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি-ভিত্তিক পরিবেশ গড়ে তোলার কথা বলেন, যা হবে সবার জন্য ন্যায্য, টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক।
এশিয়ার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্রিয় ভূমিকার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। ইউনূস বলেন, আমাদের এমন একটি অর্থায়ন কাঠামো দরকার, যা হবে শক্তিশালী, টেকসই এবং কার্যকর। তিনি বলেন, আমরা যেন কোটি কোটি প্রান্তিক মানুষকে ভুলে না যাই, যারা সমাজের মূল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
অতএব, কেবল অবকাঠামো বা শিল্পায়ন নয়, মানুষের মধ্যেও বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ব্যবসা এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের জীবনমান উন্নয়নই হবে প্রকৃত অগ্রগতি।
সম্মেলনে অংশ নিতে ২৮ মে স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫ মিনিটে টোকিও পৌঁছান অধ্যাপক ইউনূস। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী। এ সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা অংশ নিচ্ছেন, যেখানে অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং মানবকেন্দ্রিক উন্নয়নের দর্শন তুলে ধরেছেন।



