যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের এপ্রিলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর ব্যাপকহারে শুল্ক আরোপের যে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, সেটি আটকে দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আদালতের এই রায়কে ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির ওপর একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড রায় দিয়েছে যে, জরুরি আইনের অজুহাত দেখিয়ে হোয়াইট হাউস এই শুল্ক আরোপ করেছে, সেটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে একচেটিয়াভাবে বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে শুল্ক বসানোর ক্ষমতা দেয় না।
ম্যানহাটন-ভিত্তিক আদালত আরও উল্লেখ করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের একচেটিয়া ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে। অর্থাৎ, প্রেসিডেন্টের হাতে যে ক্ষমতা রয়েছে, তা কংগ্রেসের ক্ষমতার তুলনায় কম।
আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের চীন, মেক্সিকো ও কানাডার ওপর শুল্ক আরোপ সংক্রান্ত পদক্ষেপও স্থগিত করেছে। হোয়াইট হাউস তখন বলেছিল, অগ্রহণযোগ্য মাদক প্রবাহ ও অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোর উদ্দেশ্যে এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন দ্রুত আপিল করেছে। হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কুশ দেশাই বলেন, “কোনও জাতীয় জরুরি অবস্থা মোকাবিলার পদ্ধতি নির্ধারণ করা অনির্বাচিত বিচারকদের দায়িত্ব নয়।”
মামলাটি রাজনৈতিক সংস্থা লিবার্টি জাস্টিস সেন্টারের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়েছে, যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানিকারক পাঁচটি ক্ষুদ্র ব্যবসার প্রতিনিধিত্ব করে। এই মামলাটি ট্রাম্পের “লিবারেশন ডে” ট্যারিফের বিরুদ্ধে প্রথম বড় আইনি চ্যালেঞ্জ।
সর্বশেষ রায়ে তিন বিচারকের প্যানেল উল্লেখ করেছে যে, ট্রাম্পের আরোপিত শুল্কের সিদ্ধান্ত আইনগতভাবে ন্যায্য নয়। তারা লিখেছেন, “[আইইইপিএ আইন অনুযায়ী] শুল্ক আরোপের জন্য প্রেসিডেন্টকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, ট্রাম্পের ‘বিশ্বব্যাপী ও প্রতিশোধমূলক শুল্ক আদেশগুলো’ সেই ক্ষমতার পরিধিকে ছাড়িয়ে গেছে।”
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২ এপ্রিল ট্রাম্প এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যার ফলে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। যদিও পরে কিছু শর্ত পুনর্বিবেচনা করা হয় এবং অন্য দেশের সাথে দর কষাকষির চেষ্টা করা হয়।



