আসন্ন ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে পূর্ব সুন্দরবনে বন বিভাগের পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী চোরাকারবারিদের কার্যকলাপ রোধ করতে কর্মকর্তাদের কোরবানির ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আওতাধীন প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার হেক্টর বনভূমির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩১টি ইউনিট অফিসে টহল ও নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ জন্য কম্বিং অপারেশনও চালানো হচ্ছে।
নতুন দায়িত্ব নেওয়া বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে কয়েকটি কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। হরিণ শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ ধরার মতো অপরাধ ঠেকাতে পায়ে হেঁটে টহল, প্যারালাল লাইন সার্ভে, প্রযুক্তির সহায়তা ও গোয়েন্দা নজরদারি চালানো হচ্ছে।
গত মে মাসে শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জে পরিচালিত অভিযানে ৪২ কেজি হরিণের মাংস, তিনটি হরিণের মাথা, বিষমিশ্রিত ৯৫ কেজি মাছ, তিন টন জাল, কীটনাশক, ২২৬টি কাঁকড়া ধরার ফাঁদ, ১১টি নৌকা ও ট্রলার জব্দ করা হয় এবং আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ক্ষেত্রে বন আইনে ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়।
বন বিভাগ উদ্বিগ্ন যে, ঈদের ছুটিতে চোরা শিকারিরা বিশেষ করে হরিণ শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ ধরার কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হতে পারে। তাই এবারে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।
বন রক্ষীরা টহল ফাঁড়ি ও স্টেশনের আওতাধীন এলাকায় জোরদার টহল দিচ্ছেন এবং একাধিক পায়ে হাঁটার টহল দল তৈরি করা হয়েছে। নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে গহিন এলাকায়। এছাড়া পেশাজীবী ও স্থানীয়দের সচেতন করার জন্য লিফলেট বিতরণ এবং সভার আয়োজন করা হচ্ছে। বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত তথ্য দিলে পুরস্কারের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “বন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। সীমিত জনবলের মধ্যেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এবারের ঈদে ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত ব্যতিক্রম হলেও, বনের নিরাপত্তার স্বার্থে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”



