আজ ৮ জুন, বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক সমুদ্র দিবস। পরিবেশ রক্ষার প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিত ধরিত্রী সম্মেলনে এই দিবসটির ধারণা উঠে আসে এবং ঐ বছরই প্রথমবারের মতো এটি পালিত হয়।
পরবর্তীতে, ২০০৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৩তম অধিবেশনে আন্তর্জাতিক সমুদ্র দিবসকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ফলে, ২০০৯ সাল থেকে সাগরকেন্দ্রিক নানা সচেতনামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি পালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক সম্পদের বিচারে সমুদ্র এ দেশের জন্য শুধুমাত্র প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য নয়, বরং একটি বিশাল সম্ভাবনার উৎস। বঙ্গোপসাগরের বিস্তীর্ণ জলরাশি বাংলাদেশের নীল অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে তুলেছে। তবে এই সম্ভাবনা বাস্তবায়নের পথে রয়েছে কিছু বড় চ্যালেঞ্জ। দেশের সমুদ্রবিজ্ঞানী ও সংশ্লিষ্ট গবেষকদের মতে, একটি পৃথক ‘সমুদ্র মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি। সমুদ্রদূষণ প্রতিরোধ এবং সাগরসম্পদ সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে একটি নির্দিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষ থাকা আবশ্যক। বর্তমানে, বিভিন্ন সংস্থা আলাদাভাবে কাজ করলেও তাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বঙ্গোপসাগরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও টেকসই ব্যবস্থাপনায় অবিলম্বে ‘মেরিন কনজারভেশন অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করা প্রয়োজন। আলাদা মন্ত্রণালয়ের অভাবে সমুদ্রসম্পদের দেখভালের জন্য নির্দিষ্ট কোনো অভিভাবক নেই। ফলে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট ও ট্যুরিস্ট পুলিশের মতো বিভিন্ন সংস্থা সমন্বয়হীনভাবে কাজ করছে।
এই বাস্তবতায়, আন্তর্জাতিক সমুদ্র দিবসে বাংলাদেশের সামনে প্রশ্ন জাগে—আমাদের সমুদ্র কি যথাযথ গুরুত্ব পাচ্ছে? শুধুমাত্র প্রতীকী উদযাপন নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও যৌথ প্রয়াস প্রয়োজন।



