দক্ষিণ আফ্রিকায় টানা ভারী বৃষ্টিপাত, তুষারপাত ও ঝোড়ো হাওয়ার কারণে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, ইস্টার্ন কেপ প্রদেশে একটি স্কুলবাস ভেসে গেছে। বাসটিতে কতজন শিশু ছিল তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, তবে তিনজন শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
ইস্টার্ন কেপের মুখপাত্র খুসেলও রানতজিয়ে জানিয়েছেন, রাত নেমে যাওয়ায় উদ্ধার অভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে এবং বুধবার সকালে আবার তল্লাশি শুরু হবে। একই প্রদেশের ওআর টাম্বো জেলায় বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, এবং সড়ক দুর্ঘটনায় আরও পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। ভয়াবহ এ আবহাওয়ার কারণে প্রায় পাঁচ লাখ বাড়িঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চলমান দুর্যোগে ইস্টার্ন কেপ ও কওয়াজুলু-নাটাল প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইস্টার্ন কেপ হলো বর্ণবৈষম্যবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মস্থান। খারাপ আবহাওয়ার কারণে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইস্ট লন্ডন উপকূলীয় শহরের কাছে একটি মিনিবাস উল্টে গিয়ে পাঁচজন নিহত হয়েছে, কারণ চালক গাছ উপড়িয়ে সড়কে পড়ার চেষ্টা করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারান।
রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ কোম্পানি এসকম জানিয়েছে, ইস্টার্ন কেপের ১৪টি শহর ও গ্রামের প্রায় ৩ লাখ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। কওয়াজুলু-নাটালের ২৪টি এলাকায় ১ লাখ ৯৬ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। পরিবহনমন্ত্রী সিবোনিসো ডুমা জানিয়েছেন, প্রচণ্ড তুষারপাতের কারণে সড়কে ট্রাক আটকে পড়েছে, যার ফলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে এবং কিছু সড়কে তুষার ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত জমে গেছে।
আবহাওয়াবিদ লেলোহোনোলো থোবেলা সতর্ক করেছেন, উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঝোড়ো হাওয়া ও বিশাল ঢেউয়ের কারণে সমুদ্রে জাহাজ চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য, জুন থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় শীতকাল থাকে, এ সময় তাপমাত্রা প্রায়ই হিমাঙ্কের নিচে নেমে যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এখন বৃষ্টিপাত আরও তীব্র ও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। পূর্বে, ৩০ এপ্রিল থেকে ২ মের মধ্যে আকস্মিক বন্যা ও নদীর পানি উপচে পড়ায় প্রায় ৪,৫০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অন্তত ১৮ জন আহত হন।



