বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রধান হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষার সুবিধা বাড়ানোর কাজ শুরু করেছে। বর্তমানে, অল্প কিছু সরকারি হাসপাতালেই করোনা পরীক্ষা করা হয়।
গত মাসে কোভিড সংক্রমণের হার ১৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, এবং ৫ জুন করোনার কারণে প্রথম মৃত্যুর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরীক্ষার সুবিধা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে।
ডিজিএইচএসের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। আইইডিসিআরের কোভিড-১৯ নজরদারি ডেটা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মে মাসে ১,৪০৯টি নমুনার মধ্যে ৯.৫১ শতাংশ কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিল, যা জানুয়ারির পরে সর্বোচ্চ। আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে, কোভিড রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বর্তমানে জনসাধারণের জন্য উদ্বেগের কিছু নেই, তবে সতর্কতার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এপ্রিল মাসে দুটি নতুন ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। আইসিডিডিআর,বি-র প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গবেষণায় অংশ নেওয়া হাসপাতালগুলোর রোগীদের মধ্যে প্রায় ৭ শতাংশ নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক হালিমুর রশীদ জানান, আরটি-পিসিআর ল্যাবসহ হাসপাতালগুলোকে পরীক্ষা পুনরায় চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনা পরীক্ষার কিট স্থানীয় এবং বিদেশ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষা শুরু হবে। শুধুমাত্র কোভিড-১৯ এর উপসর্গ থাকা রোগী এবং ডাক্তারদের পরামর্শে পরীক্ষা করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত ৪ জুন সব স্থল, নদী ও বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে। করোনাভাইরাসের নতুন উপ-ধরনগুলো, বিশেষ করে ওমিক্রন এলএফ.৭, এক্সএফজি, জেএন.১, এবং এনবি.১.৮.১ যাতে বিস্তার না পায়, সেজন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, ভারতসহ যেসব দেশে নতুন সংক্রমণ বেড়েছে, সেখানে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ৬ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা জারি করেছে, যা বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষও পালন করতে বলেছে।
বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম কোভিড-১৯ শনাক্ত হয় এবং এরপর ২০ লাখ ৫১ হাজারের বেশি আক্রান্ত ও ২৯,৪৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২০২১ সাল ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী।



