বাংলাদেশের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বাড়তে থাকলেও দেশের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতাল এখনো কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হয়নি। বর্তমানে করোনা পরীক্ষার ৯০ শতাংশের বেশি বেসরকারি হাসপাতালে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুনের প্রথম ১৫ দিনে ২০টি হাসপাতালে কোভিড-১৯ পরীক্ষা হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র তিনটি সরকারি হাসপাতাল—কক্সবাজার, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
এই সময়ের মধ্যে মোট এক হাজার ১৩৫ জনের করোনা পরীক্ষার মধ্যে তিনটি সরকারি হাসপাতালে হয়েছে মাত্র ১০৫টি পরীক্ষা। অনেক সরকারি হাসপাতাল দীর্ঘ সময় ধরে করোনা পরীক্ষা না করায় যন্ত্রপাতি পুনরায় ক্যালিব্রেশন প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়ে করোনা পরীক্ষা পুনরায় শুরু করতে কিট ও সরঞ্জাম চেয়েছে। হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ার কারণে ক্যালিব্রেশনের প্রয়োজন। এছাড়া, করোনা পরীক্ষার জন্য কোনো বিশেষ টেকনিশিয়ানও নেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত বৃহস্পতিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের ছয়টি প্রধান হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার কিট সরবরাহ করেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকরা জানিয়েছেন, তারা ১৪ জুন থেকে পরীক্ষা শুরু করবেন। তবে, গতকাল পর্যন্ত এসব হাসপাতালে কোনো পরীক্ষা হয়নি, যা তাদের পরিকল্পনার বাস্তবায়ন না হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
অন্যদিকে, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালের পরিচালকরা নিয়মিত রোগীদের পরীক্ষা করছেন। ঢাকার বাইরে ১১টি মেডিকেল কলেজকে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার সুবিধা চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচটি মেডিকেল কলেজ তাদের যন্ত্রপাতি চালু করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের লাইন ডিরেক্টর হালিমুর রশিদ জানিয়েছেন, তারা আরও সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার কিট পাঠাচ্ছেন এবং ঈদের ছুটির পর অফিস খুলেছে, তাই এক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালগুলো প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স প্রকল্প শেষ হওয়ার কারণে এক হাজার চার জন টেকনিশিয়ান ও মেডিকেল অফিসারের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলন চলছে। তারা জানান, তাদের অভাবে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসায় বিঘ্ন ঘটতে পারে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৬ জনের এবং একজন মারা গেছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।



