ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এক সপ্তাহে গড়ালেও উত্তেজনা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সংঘাতে সরাসরি জড়াতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, এমন আভাসও পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে, ইরানও পিছু হটছে না। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের এই সংঘাত দ্রুতই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
এ প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাসীর প্রতি কঠিন সতর্কবার্তা দিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। তিনি বলেছেন, “বিশ্ব এখন বিপর্যয়ের কিনারায়। এই পরিস্থিতি ঠেকাতে এখনই কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।”
বুধবার (১৮ জুন) সেন্ট পিটার্সবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামে বক্তব্য দিতে গিয়ে জাখারোভা এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “ইরানের পারমাণবিক ও বেসামরিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েল হামলা চালাচ্ছে। আমি সামরিক নয়, বরং শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক উন্নয়ন-সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর কথাই বলছি। পরিস্থিতি ভয়াবহভাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এটা এক ধরনের রাক্ষসী খেলা, যার পরিণতি হতে পারে অপ্রত্যাশিত এবং ধ্বংসাত্মক।”
তবে সংকট সত্ত্বেও এখনও কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোলা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দিলে তা মধ্যপ্রাচ্যকে পুরোপুরি অস্থিতিশীল করে তুলবে—এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ।
এদিকে, সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি বলেন, “রাশিয়া এই সংকটে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত।”
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস-এর বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, দুই নেতা চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
গত ছয় দিন ধরে ইরানে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ড্রোন, যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এসব হামলা চালানো হচ্ছে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইরানও। এদিকে ইরানের ওপর হামলার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, এমন খবর আরও উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান এই সংঘাত এখনই থামানো না গেলে তা বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে।



