জুলাই আন্দোলনে ছাত্রদের পক্ষে বেশ সরব ছিলেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা এবং এক শ্রেণির মানুষের সমালোচনায় আমি গভীরভাবে হতাশ। এখন আর এই দেশের কাছে কোনো প্রত্যাশা রাখি না।
একটা গল্প আছে—শীতের সকালে এক ইমাম আর এক চোর ফজরের নামাজে যায়। ইমাম ভাবে, “কি ভালো মানুষ! এমন ঠান্ডায় নামাজ পড়তে এসেছে।” চোর ভাবে, “কি ভদ্রলোক! দাড়ি রেখে চুরি করে!” গল্পটা আসলে চিন্তার ভিন্নতার কথা বলে—যে যেমন, সে অন্যদেরও তেমন ভাবার চেষ্টা করে।
আমি বিশ্বাস করি, পৃথিবীর সব মানুষ টাকা বা ডলারের কাছে তাদের নৈতিকতা বিক্রি করে না। সবাই স্রোতের সঙ্গে চলে না, কেউ কেউ বিপরীতেও হাঁটে, রিস্ক নেয়।
জুনে যখন আন্দোলন তুঙ্গে, তখন হঠাৎ ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেল। এরপর কিছু সেলিব্রিটিকে মেট্রোরেল বা বিটিভিতে আগুন দেওয়ার প্রতিবাদে ভিডিও করতে বলা হয়। আমিও সেই তালিকায় ছিলাম। আমি প্রথমে সময় চাই। সাহস জোগাড় করতে পারিনি সরাসরি না বলার। পরে সিয়ামকে মেসেজ দিই—”তুমি কি কল পেয়েছো?” সে জানায়, পেয়েছে এবং না করেছে। তখন আমিও সাহস পাই এবং না বলে দিই।
এই কথাগুলো অযথা বলে বেড়ানোর ইচ্ছে ছিল না। সেসময় এটাই করণীয় মনে হয়েছিল। আমি কোনো ক্রেডিট চাইনি। কারণ আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না—পরোক্ষভাবেও না। ভবিষ্যতেও কোনো ইচ্ছা নেই। তবু যখন দেখি কেউ বলে “ডলার খেয়ে এসব করেছে,” তখন হাসি ছাড়া কিছু করার থাকে না।
আমি এমন অনেককে চিনি, যারা আওয়ামী লীগকে সত্যিই ভালোবাসে, কিন্তু তারাও জুলাইয়ে লাল প্রোফাইল পিকচার দিয়েছিল। হয়তো সময়ের প্রেক্ষাপটে ব্যাপারটা এখন অন্যরকম মনে হয়, কিন্তু সেসময় আপনি যদি একজন মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে কোন মানুষকে হত্যার প্রতিবাদ না করে থাকতে পারতেন না, রাজনীতি যাই হোক না কেন।
সবশেষে বলি, আমি আর আমার দেশের কাছে কোনো প্রত্যাশা রাখি না। এটাই আমার শেষ রাজনৈতিক স্ট্যাটাস। আমি বুঝে গেছি, আমরা জাতি হিসেবে নির্লজ্জ, বেহায়া। যত আন্দোলন হোক, সরকার বদলাক, শান্তিতে নোবেল পাওয়া মানুষ আসুক—এই দেশের কেউ দুর্নীতি বা চুরি থেকে বিরত থাকবে না। ক্ষমতা পেলে সবাই তা অপব্যবহার করে।
আর হ্যাঁ, সত্যিই যদি ডলার পেতাম, খারাপ লাগত না। শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে ২৫,৩০০ টাকা দিয়ে ২০০ ডলার এন্ডোর্স করতে গিয়ে কত কষ্টই না হলো!



