
সম্প্রতি ময়মনসিংহে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত ম্যুরাল ‘অঞ্জলি লহ মোর’ প্রশাসনিক নির্দেশে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে দেশের ১২০ জন সংস্কৃতিকর্মী, কবি, লেখক, সাংবাদিক ও প্রগতিশীল নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। কবি গিরীশ গৈরিক এবং কথাসাহিত্যিক শামস সাইদ এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সম্প্রতি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়েছে, যা আমাদের শিল্পকলা এবং সংস্কৃতির প্রতি চরম অবমাননা। এটি মণীন্দ্র পালের তৈরি, যা প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদের নাচের মুদ্রা থেকে অনুপ্রাণিত। এটি সাধারণ একটি শিল্পকর্ম নয়, বরং নারীর মানবিক শক্তি এবং মানবিক সংযোগের প্রতীক। এই ধরনের শিল্পকর্মের ধ্বংস আমাদের সংস্কৃতি ও মানবিক চেতনায় আঘাত হানে।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতীক ও স্থাপনা ধ্বংসের অপপ্রয়াস চলছে, যা ধর্মীয় উগ্রবাদ এবং অপরাজনীতির ফল। স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ, ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের নানা স্মৃতির ভাস্কর্য এবং শিল্পকর্মের ওপর আঘাত এসময় বহুবার ঘটেছে। এগুলো আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতি চরম অপমান।’
বিবৃতিতে সম্মতি প্রদানকারীদের মধ্যে রয়েছেন: কবি ইসহাক খান, কবি সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, প্রাবন্ধিক ড. মুকিদ চৌধুরী, কবি সালাহউদ্দিন বাদল, লেখক ড. নুরুন নবী, সাংবাদিক শিমুল সালাহ্উদ্দিন, কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. মাসুদ পথিক, কবি আজয় দাশগুপ্ত, লেখক শোয়েব ইবনে শাহীন, কবি খালেদ সরফুদ্দীন, এবং বহু আরও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সামাজিক কর্মী।
আমরা এই ধরনের অপচর্চার কঠোর নিন্দা জানাই এবং আশা করি, ভবিষ্যতে আমরা একটি সহনশীল, সংস্কৃতিমনা এবং সভ্য জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারব।