রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানিয়েছেন, একজন ব্যক্তি যেন জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ ১০ বছরের বেশি সময় প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে না পারেন—এমন প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
রবিবার (২২ জুন) দুপুরে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে অংশ নিয়ে তাহের বলেন, “বার ও মেয়াদ নিয়ে বিতর্কের মধ্যে আমরা প্রস্তাব করেছি—একজন ব্যক্তি তার জীবনে সর্বোচ্চ দশ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। এটি জাতির আকাঙ্ক্ষা, আমি মনে করি।”
তিনি আরও বলেন, “বার ও মেয়াদের ব্যাখ্যায় যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনটি দল ছাড়া বাকি সবাই এ প্রস্তাবে একমত হয়েছে। এটি হওয়া উচিত সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়া সিদ্ধান্ত।”
তাহের জানান, বিশ্বের অনেক দেশেই এমন নজির রয়েছে। বাংলাদেশেও এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে তারা মনে করেন। বিকেলে আরও দুটি বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আলী রীয়াজ, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মঈদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।
এর আগে গত ১৭ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপ অনুষ্ঠিত হলেও তাতে জামায়াতে ইসলামী অংশ নেয়নি। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগের পর পরদিন তারা আলোচনায় যোগ দেয়।
এদিকে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনসহ কয়েকটি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো ঐকমত্য হয়নি। প্রধানমন্ত্রী পদে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে এনসিসি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি এবং সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন নিয়েও গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত চার দিনের সংলাপে দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হয়নি। এমনকি “ঐকমত্য” শব্দের সংজ্ঞা নিয়েও ভিন্নমত প্রকাশ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার কথাও ভাবছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।



