গোয়েন্দা তথ্য ফাঁসের ঘটনায় মার্কিন গণমাধ্যমের তীব্র সমালোচনা ট্রাম্পের
মোহনা অনলাইন
যুক্তরাষ্ট্রে ফাঁস হওয়া একটি পেন্টাগন গোয়েন্দা তথ্য বলছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলায় তা পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। হামলার ফলে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি শুধু কয়েক মাস পিছিয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই তথ্যকে ‘ভুয়া খবর’ আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন। একই সুরে কথা বলেছেন তার মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, যিনি এই ফাঁসকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে মন্তব্য করেছেন।
মঙ্গলবার ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে এক নাজুক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরই এ গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস হয়।
এর আগে শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফরদো, নাতানজ ও ইস্ফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করে হামলা চালায়। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি ছিল, এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে।
কিন্তু ফাঁস হওয়া তথ্য বলছে, বেশির ভাগ সেন্ট্রিফিউগ এবং মাটির নিচের স্থাপনা অক্ষত রয়েছে। ক্ষতি হয়েছে মূলত মাটির ওপরে থাকা অবকাঠামোর। দুটি স্থাপনায় প্রবেশ পথ সিল করে দেওয়া হয়েছে এবং কিছু অংশ ধ্বংস হয়েছে।
অজ্ঞাত মার্কিন সূত্রগুলো জানিয়েছে, হামলার আগেই ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ সরিয়ে নিয়েছিল। ফলে এই হামলায় কর্মসূচির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয়নি—শুধু কিছু সময় পিছিয়ে গেছে।
এই প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। তিনি নিজের ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, “ভুয়া খবর সিএনএন এবং ব্যর্থ নিউ ইয়র্ক টাইমস ইতিহাসের সবচেয়ে সফল সামরিক হামলাকে হেয় করার চেষ্টা করছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে।” স্টিভ উইটকফ ফক্স নিউজকে বলেন, “এই ফাঁস একটি জঘন্য কাজ এবং এর তদন্ত হওয়া উচিত। দোষীদের জবাবদিহি করতে হবে।”
উল্লেখ্য, হামলার সময় ফরদোতে ১২টি ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা নিক্ষেপের কথাও জানানো হয়। ট্রাম্প দাবি করেছেন, “সেখানে কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই।”
এদিকে, ১২ দিনব্যাপী যুদ্ধ শেষে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর ইরান ও ইসরাইল উভয়ই নিজেদের বিজয় দাবি করেছে। তেহরানে বিজয় উদযাপনে জনতার ঢল নামে, অন্যদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, “এই বিজয় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে টিকে থাকবে।”
এই যুদ্ধে ইরানে অন্তত ৬১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৩ জন শিশু। আহত হয়েছেন ৩ হাজারের বেশি মানুষ। ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরাইলেও নিহত হয়েছেন অন্তত ২৮ জন।



