শিক্ষা

বিশেষ অনুদান পাচ্ছে ৭১০০ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

দেশের সাত হাজার ১০০ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ছয় কোটি ৪১ লাখ দুই হাজার টাকার বিশেষ অনুদান দিচ্ছে সরকার। অনুদানপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছে ১০১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২৫০ জন শিক্ষক-কর্মচারী, চার হাজার ৪৭ জন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং দুই হাজার ৭০২ জন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

গত ১৭ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বাজেট শাখার উপসচিব লিউজা-উল-জান্নাহ স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, চলতি অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ‘বিশেষ অনুদান’ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রত্যেকে এক লাখ টাকা করে মোট এক কোটি এক লাখ টাকা, ২৫০ জন শিক্ষক-কর্মচারী প্রত্যেকে ৩০ হাজার টাকা করে মোট ৭৫ লাখ টাকা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার হাজার ৪৭ জন শিক্ষার্থী প্রত্যেকে আট হাজার টাকা করে মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির এক হাজার ৪২৮ জন শিক্ষার্থী প্রত্যেকে ৯ হাজার টাকা করে মোট এক কোটি ২৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা, স্নাতক ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের এক হাজার ২৭৪ জন শিক্ষার্থী প্রত্যেকে ১০ হাজার টাকা করে মোট এক কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা অনুদান পাবে।

পত্রে আরও বলা হয়, বরাদ্দকৃত অর্থ বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থ তাদের নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে অনলাইনে পাঠানো হবে এবং শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের অর্থ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি ‘নগদ’-এ পাঠানো হবে।

এর আগে, গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের তৎকালীন সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক পত্রে দেশের সব বেসরকারি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এর আওতাধীন শিক্ষক এবং সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দের একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।

সেখানে বলা হয়, আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য জেলা প্রশাসককে সভাপতি এবং জেলা শিক্ষা অফিসারকে সদস্যসচিব করে ৯ সদস্যের একটি জেলা পর্যায়ের কমিটি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে (প্রশাসন ও অর্থ) আহ্বায়ক এবং উপসচিব বা জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিবকে (বাজেট) সদস্যসচিব করে ১৩ সদস্যের একটি চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করতে হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকার উন্নয়নশীল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত শিক্ষক-কর্মচারী ও দুঃস্থ, প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ, অসহায়, রোগাক্রান্ত, দরিদ্র, মেধাবী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বিশেষভাবে, ক্যান্সার, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, হেপাটাইটিস, ডায়াবেটিস, পক্ষাঘাত, বক্ষব্যাধি, কৃত্রিম অঙ্গ সংযোজন এবং দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় থাকা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্যও অনুদান বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের বাসসকে বলেন, ‘সরকার শিক্ষাকে সবার জন্য সমভাবে বিস্তারের লক্ষ্যে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে অনগ্রসর কিন্তু ভালো ফল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে বিশেষ অনুদান বরাদ্দ অব্যাহত রয়েছে।’

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button