আমেরিকায় কর ও ব্যয় সংকোচনের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে নতুন অর্থবিলের খসড়া সই করেছেন, সেটি আদৌ আইনে পরিণত হবে কি না—তা নিয়ে খোলামেলা বিতর্ক সভা আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে। বিলটি নিয়ে আলোচনা হবে সেনেটে, এবং তা অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে ভোটাভুটির মাধ্যমে। চলতি সপ্তাহেই সেই ভোট হতে পারে।
বিল নিয়ে বিতর্কের আগেই আবারও কড়া সমালোচনায় মুখর হয়েছেন মার্কিন ধনকুবের ও স্পেসএক্সের কর্ণধার ইলন মাস্ক। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, বিলটি আইনে পরিণত হলে যুক্তরাষ্ট্রে লক্ষ লক্ষ মানুষের চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। মাস্ক বলেন, ‘‘এই বিল রিপাবলিকানদের রাজনৈতিক আত্মহত্যার সমান।’’
এর আগেও ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির কড়া সমালোচনা করেছিলেন মাস্ক। এক পর্যায়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব ব্যক্তিগত কাদা ছোড়াছুড়ির পর্যায়ে পৌঁছে যায়, যদিও পরে উভয়পক্ষই সংযত হন। তবে গত শনিবার (স্থানীয় সময়) মাস্কের নতুন মন্তব্যে বিতর্ক আরও উস্কে উঠেছে।
এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক লেখেন, ‘‘সেনেটের ড্রাফট বিলটি আমেরিকার লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান ধ্বংস করবে। এটি ভবিষ্যতের শিল্পকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং দেশের কৌশলগত অবস্থানকে দুর্বল করে তুলবে। এই বিল একেবারেই উন্মাদ ও ধ্বংসাত্মক।’’
এমনকি একটি জনমত সমীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে মাস্ক মন্তব্য করেন, “এই বিল রিপাবলিকানদের রাজনৈতিক আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
অন্যদিকে ট্রাম্প এই বিলকে ‘বড় সুন্দর বিল’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি মাস্কের সতর্কবার্তা উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, এই বিল আমেরিকার অর্থনীতিতে গতি আনবে। তিনি আরও বলেন, ৪ জুলাইয়ের মধ্যে এই বিল পাশ করানো জরুরি, এবং রিপাবলিকান সিনেটররা সে লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছেন।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্প ইলন মাস্ককে প্রশাসনে উচ্চ পদে নিয়োগ দিয়ে হোয়াইট হাউসে “ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)” নামে একটি বিশেষ দফতর গঠন করেছিলেন। এই দফতরের কাজ ছিল সরকারি খরচে কাটছাঁট করে ব্যয় সংকোচন নিশ্চিত করা। তবে কিছুদিন আগে মাস্ক ওই পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং এরপর থেকেই প্রকাশ্যে ট্রাম্পের অর্থবিলের সমালোচনা শুরু করেন।
বিলের ভবিষ্যৎ এখন সেনেটের ভোটাভুটির ওপর নির্ভর করছে। মাস্কের হুঁশিয়ারির পর এই বিতর্ক সেনেটরদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।



