এ সপ্তাহের মধ্যেই গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বৈঠক করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে। তবে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার মধ্যেও গাজায় ইসরাইলি সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলায় গাজার আল মাওয়াসি শরণার্থী শিবিরে বেশ কয়েকজন নিহত হন। একই দিনে ইসরাইলি আক্রমণের মুখে গাজা সিটির জয়তুন হাসপাতালের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া পশ্চিম তীরের সাইর গ্রামে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ হয়। মুখোশধারী দখলদারদের হাতে লাঠি দেখা যায়, আর ফিলিস্তিনিরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। ইসরাইলি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ ও সহিংসতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে লেবাননের ত্রিপোলিতে এক ড্রোন হামলায় হামাস নেতা মাহরান মোস্তাফা বাজউরসহ আরও দুইজন নিহত হন বলে দাবি করেছে ইসরাইল। তেল আবিব জানায়, বাজউর লেবাননে হামাসের অস্ত্র সরবরাহ নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন এবং ইসরাইলে রকেট হামলার পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন।
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যে সোমবার অনুষ্ঠিত বৈঠকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মঙ্গলবার দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসেন তারা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, গাজা সংকট সমাধানে দুই নেতা একমত এবং তিনি আশা করেন, সপ্তাহের শেষ নাগাদ একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তি হতে পারে।
ট্রাম্প বলেন, “আমি নেতানিয়াহুর সঙ্গে প্রায় একমাত্র বিষয় হিসেবে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি।” নেতানিয়াহুও জানান, এখনো অনেক কাজ বাকি, যার মধ্যে রয়েছে জিম্মিদের মুক্তি এবং হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করা।
নেতানিয়াহু বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও আমি ‘শক্তির মাধ্যমে শান্তি’ নীতিতে বিশ্বাস করি। আগে আসে শক্তি, তারপর আসে শান্তি।” তিনি আরও দাবি করেন, “ইসরাইলকে ধ্বংস করতে চাওয়া ও বিশ্বশান্তিকে হুমকির মুখে ফেলা শক্তির বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের যৌথ পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে।”
এদিকে লন্ডনে অবস্থানরত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি একমাত্র টেকসই সমাধান হলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া।
আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক বৈঠক থেকে খুব কম তথ্যই জনসমক্ষে এসেছে, ফলে বাস্তব অগ্রগতি নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। তবে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছানো গেছে এবং সপ্তাহ শেষে চূড়ান্ত সমঝোতা হতে পারে।



