ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনে একদিনে গাজার অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে আরও অন্তত ৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় মৃতের সংখ্যা ৫৮ হাজার ২৬ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন অংশে আবারও বিমান হামলা চালায়। জনবহুল একটি বাজার ও একটি পানি সংগ্রহ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে চালানো হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ৯৫ জন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গাজার একটি বাজারে হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন গাজার খ্যাতনামা চিকিৎসক আহমেদ কান্দিল। অন্যদিকে, মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি পানিকেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১০ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই শিশু। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার সময় শিশুরা পানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময়ই ওই স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র এসে আঘাত হানে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তাদের লক্ষ্য ছিল একজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা, কিন্তু ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে ক্ষেপণাস্ত্র ভুল স্থানে আঘাত হানে। তবে এই দাবি স্বাধীন কোনো সূত্রে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, গাজায় পানির সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় অধিকাংশ পানিশোধন ও নিষ্কাশন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সাধারণ মানুষকে বিকল্প ও বিপজ্জনক পথ পেরিয়ে কিছু নির্দিষ্ট পানিকেন্দ্রে যেতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, চলমান যুদ্ধের ফলে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ জন।
জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, শুধু জুন মাসেই ৫ হাজার ৮০০–এর বেশি শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১ হাজার শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রোববার আরও এক শিশুর অপুষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে। ইউনিসেফ বলেছে, “শিশুদের দেহ যেন গলে যাচ্ছে। এটি শুধু পুষ্টির সংকট নয়, এটি শিশুদের বেঁচে থাকার এক জরুরি সংকট।”



