নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সহিংস বিক্ষোভের পর প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেছেন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন নিহত হওয়ায় দেশজুড়ে কারফিউ জারি এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনে হামলা চালিয়েছে এবং কয়েকজন রাজনীতিকের বাড়িতে আগুন ধরিয়েছে।
এই অস্থিরতা ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ। নেপালের সঙ্গে ভারতের প্রায় ১,৭৫০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যে গভীর পারিবারিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আছে। নেপাল ভারতের কৌশলগত প্রতিবেশী এবং চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ড নেপালের সীমানার ওপারেই অবস্থান করছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্সে লিখেছেন, “নেপালের সহিংসতা হৃদয়বিদারক। এত তরুণ প্রাণহানিতে আমি মর্মাহত। নেপালের স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সমৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি।” গত মঙ্গলবার তিনি মন্ত্রিসভার সঙ্গে জরুরি বৈঠকও করেছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন নেপালি নেতৃত্বের সঙ্গে ভারতকে সতর্ক কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। ওলির উত্তরসূরী কী ধরনের সরকার গঠন করবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। ভারতকে বিশেষ করে শিক্ষাবৃত্তি, কর্মসংস্থান ও তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মনোযোগ দিতে হবে।
নেপালের এই অস্থিরতা বাংলাদেশের এবং ২০২২ সালের শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক সংকটকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। ভারত ও চীন উভয়ই নেপালে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভারতের উচিত নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং দেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতাকে প্রশমিত করা।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল অশোক মেহতা মন্তব্য করেছেন, “ভারত তার বৃহৎ শক্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখছে, কিন্তু সেই লক্ষ্য অর্জনের আগে প্রতিবেশে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।”



