ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গের হিমঘরে জমে আছে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি মরদেহ । অভিযোগ উঠেছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের অসহযোগিতার কারণেই দীর্ঘদিন ধরে এসব বেওয়ারিশ মরদেহের দাফন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মরদেহগুলোর চূড়ান্ত নিষ্পত্তির বিষয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছে পুলিশ।
দুই কোটিরও বেশি মানুষের এই মহানগরীতে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে নাম-পরিচয়হীন মরদেহ এসে জমা হয় রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে। পরিচয় শনাক্তের পর স্বজনরা কিছু মরদেহ নিয়ে গেলেও, বেশিরভাগই অজ্ঞাত থেকে যায়। আগে নিয়মিতভাবে এসব মরদেহের ছবি ও ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফনের ব্যবস্থা করা হতো।
কিন্তু সম্প্রতি সংস্থাটি রাজধানীর হাসপাতালগুলো থেকে মরদেহ গ্রহণ বন্ধ করায় বর্তমানে ঢামেক মর্গে অর্ধশতাধিক বেওয়ারিশ মরদেহ জমে আছে। এতে ধারণক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে হিমঘরটি। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কাজী গোলাম মুখলেসুর রহমান বলেন, “সিটি করপোরেশনের কোনো প্রশাসনিক জটিলতা আছে বলে মনে হচ্ছে। ফলে তারা মরদেহগুলো নিষ্পত্তি করতে পারছেন না। এ বছর যদি এগুলো খালি না করা হয়, তাহলে নতুন করে আসা মরদেহ রাখাও কঠিন হবে।”
ডিএমপি রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম জানান, “আগে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত মরদেহ জুরাইন কবরস্থানে এবং উত্তর সিটির মরদেহ বধ্যভূমি এলাকায় দাফন করা হতো। কিন্তু এখন অনুমতির জটিলতা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনিক বাধার কারণে আমরা বিপাকে আছি।”
দীর্ঘদিন ধরে বেওয়ারিশ মরদেহ দাফনের দায়িত্ব পালন করা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের দাবি, “ঢাকা দক্ষিণ সিটি এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দাফনের অনুমতি দিত ডিএসসিসি, বাকিগুলো উত্তর সিটির কবরস্থানে দাফন করা হতো। কিন্তু সম্প্রতি উত্তর সিটি তার আওতার বাইরে থেকে আসা মরদেহ দাফনের অনুমতি দিচ্ছে না। এই জটিলতার কারণেই আমরা মর্গ থেকে মরদেহ নিতে পারছি না।”
চলমান এই সংকটে ঢামেক মর্গের হিমঘর এখন কার্যত মরদেহে ঠাসা—আর নতুন করে মরদেহ সংরক্ষণের কোনো সুযোগও অবশিষ্ট নেই।



