Top Newsআন্তর্জাতিক

মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফেরাতে ট্রাম্প-সিসির নেতৃত্বে গাজা সম্মেলন কাল

মোহনা অনলাইন

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন শান্তি প্রস্তাব নিয়ে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। আগামীকাল ১৩ অক্টোবর (সোমবার) মিশরের শার্ম আল-শেখে এ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

মিশরের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় স্থানীয় সময় ১১ অক্টোবর (শনিবার) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই বৈঠকে ২০টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা অংশ নেবেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকের লক্ষ্য হলো “গাজার যুদ্ধের অবসান, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার নতুন যুগের সূচনা।”

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ইতালির জর্জিয়া মেলোনি, স্পেনের পেদ্রো সানচেজ এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বা হামাস–এর কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

শুক্রবার থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উপকূলীয় সড়ক ধরে উত্তরের ধ্বংসস্তূপে ফিরতে শুরু করেছে।

ইসরায়েলি সেনারা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া চুক্তির প্রথম ধাপ অনুযায়ী কিছু এলাকা থেকে সরে গেছে। দুই বছরের বিধ্বংসী যুদ্ধে গাজায় ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, আর অঞ্চলটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।

গাজার সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর থেকে ৮৫০টির বেশি উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১৫০টির বেশি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসে নাসের হাসপাতাল একাই ২৮টি মরদেহ পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

গাজার মেয়র বলেন, ইসরায়েলি হামলায় শহরের ৮৫ শতাংশ এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং শহর পরিষ্কার করতে প্রায় ৪ লাখ টন ধ্বংসাবশেষ সরাতে হবে।

জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলো ইসরায়েলকে আরও বেশি সীমান্ত ক্রসিং খুলে দিতে আহ্বান জানিয়েছে, যাতে মানবিক সহায়তা দ্রুত গাজায় পৌঁছানো যায়।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, তারা গাজা জুড়ে ১৪৫টি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র পুনরায় চালু করতে প্রস্তুত।

ইউনিসেফের মুখপাত্র টেস ইনগ্রাম জানিয়েছেন, ১২ অক্টোবর (রবিবার) থেকে তারা অপুষ্ট শিশুদের জন্য বিশেষ খাদ্য, নারী স্বাস্থ্য উপকরণ এবং তাঁবু পাঠানো শুরু করবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ১২ অক্টোবর (সোমবার) ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দি এবং ২৮ জনের মরদেহ হামাস ফেরত দেবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল ২৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি এবং প্রায় এক হাজার ৭০০ জন গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে, যারা গত দুই বছরে আটক হয়েছিলেন।

ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবারের সদস্যরা শনিবার তেল আবিবে ‘হোস্টেজেস স্কোয়ারে’ সমবেত হয়ে ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের জামাতা জ্যারেড কুশনার, কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প এবং মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

উইটকফ বলেন, “আজকের রাত স্বপ্নের মতো। বন্দিরা যখন ঘরে ফিরবে, তখন গোটা বিশ্ব তাদের ভালোবাসা ও সম্মানের সঙ্গে স্বাগত জানাবে।”

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দিদের পরিবারের সদস্যরা এই চুক্তির কৃতিত্ব ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকে দিচ্ছেন, কারণ তাদের মতে, “নিজ সরকারের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে ইসরায়েলিরা।”

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button