মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো, তার স্ত্রী এবং ছেলেকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ট্রেজারিমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওয়াশিংটন অভিযোগ করেছে, পেত্রো মাদক চোরাচালান দমন করতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং অপরাধী চক্রগুলোকে অবাধে সক্রিয় থাকতে দিয়েছেন।
মার্কিন ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রেসিডেন্ট পেত্রো মাদক কার্টেলগুলোকে বেড়ে উঠতে দিয়েছেন এবং এই কার্যক্রম থামাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।”
নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন পেত্রোর স্ত্রী, বড় ছেলে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরমান্ডো বেনেদেত্তিও। তাদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ ও সম্পত্তিতে প্রবেশাধিকার বন্ধ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ড্রাগবিরোধী যুদ্ধ’-এ একসময় ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল কলম্বিয়া। কিন্তু ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পেত্রো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমেই তিক্ত হয়ে উঠেছে।
২০২২ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত কলম্বিয়ায় যে পরিমাণ কোকেন উৎপাদিত হচ্ছে, তা গত কয়েক দশকের চেয়েও বেশি। এই বিপুল পরিমাণ কোকেন বন্যার মতো প্রবেশ করছে যুক্তরাষ্ট্রে এবং মার্কিনিদের জীবন বিষময় করে তুলছে।”
“এই কোকেন উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীদের দমন করার পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট পেত্রো এদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন; কিন্তু যেহেতু আমাদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিকে মাদকের সর্বনাশা ছোবল থেকে রক্ষা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং এ কারণেই কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির মতো কঠোর পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। আমরা যুক্তরাষ্ট্রে মাদকপাচার সহ্য করব না।”
এদিকে নিষেধাজ্ঞা জারির পর এক প্রতিক্রিয়ায় গুস্তাভো পেত্রো দাবি করেছেন ট্রেজারি মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে মিথ্যাচার করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি মন্ত্রণালয় যা বলছে, তা মিথ্যা। আমার নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে কোকেনের উৎপাদন বৃদ্ধি নয়, বরং হ্রাস পেয়েছে। এই সরকারের আমলে যে পরিমাণ কোকেন জব্দ করা হয়েছে, বিশ্বের ইতিহাসে আর কোনো দেশ এত কোকেন জব্দ করেনি।”
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট পেত্রো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি “দশকের পর দশক ধরে” মাদকবিরোধী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মাদক ব্যবহারের হার কমাতেও ভূমিকা রেখেছেন।
তিনি লেখেন, “এ এক অদ্ভুত বৈপরীত্য—তবু আমরা মাথা নত করব না।”
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌযানে বিমান হামলা চালাচ্ছে। পেত্রো এসব হামলাকে “স্বৈরাচারী পদক্ষেপ” বলে আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেন, এতে এক কলম্বিয়ান নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন হয়েছে।



