অপরাধরাজনীতি

পুনরায় আওয়ামী লীগ গঠনের গুঞ্জন লিয়াকত শিকদারের বিরুদ্ধে

সাবেক ছাত্রলীগ নেতার ব্যাংক হিসাব জব্দ

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার দেশের ছাত্র রাজনীতিতে এক সময় ছিলেন অত্যন্ত প্রভাবশালী নাম। দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে সংগঠন নিয়ন্ত্রণ, সিন্ডিকেট গঠন এবং বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠে এসেছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা দেশে আবারও আওয়ামীলীগ ফেরানোর চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে উঠে আসা অভিযোগ এক নজরে-

ছাত্রলীগে সিন্ডিকেটের অভিযোগ
২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন লিয়াকত শিকদার। সংগঠনের বেশ কিছু নেতা অভিযোগ করেন, ওই সময় থেকেই তিনি ছাত্রলীগে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করেন। কারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসবে, পদবণ্টন কেমন হবে – তা আগেই ঠিক করে দেওয়া হতো।

বহু সেক্টরে প্রভাব বিস্তার
ছাত্রলীগের নেতৃত্ব ছাড়ার পরও তার প্রভাব কমেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। পানি উন্নয়ন, এলজিইডি, গৃহায়ণ ও গণপূর্তসহ বিভিন্ন সেক্টরে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকার খবর গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। অভিযোগ ছিল, তার সিন্ডিকেটভুক্ত ব্যক্তিরা এসব খাতের প্রকল্পে সুবিধা এনে দিতেন, আর অর্থ যেত লিয়াকতের পকেটে।

ব্যাংক হিসাব জব্দ
২০২৪ সালের ২০ আগস্ট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) লিয়াকত শিকদার, তার স্ত্রী এবং তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে। বিএফআইইউ জানায়, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা অনুযায়ী সব লেনদেন তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত ও তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে (সূত্র: যুগান্তর, বিডি প্রতিদিন)।

বিদেশে বিলাসী জীবনের প্রশ্ন

শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর স্বপরিবারে দিল্লীতে অবস্থান করছেন তিনি। তার দুই সন্তান দিল্লীর স্বনামধন্য দুইটি স্কুলে পড়াশোনা করছে। দিল্লীর অভিজাত এলাকায় ফ্লাট কিনেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হইলো তার ব্যক্তিগত, স্ত্রীর এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ২০ আগষ্ট ২০২৪ সালে জব্দ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠানো হয়। লেনদেন স্থগিত করার এ নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়।

এদিকে ব্যাংক হিসাব জব্দ থাকা অবস্থায়ও তার বিদেশে অবস্থান, উচ্চ খরচের জীবনযাপন এবং পরিবারের শিক্ষাব্যয় কোথা থেকে চালানো হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে গণমাধ্যম। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসব প্রশ্নের জবাব অজানা রয়ে গেছে। এছাড়াও সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে লিয়াকত নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সাথে মিটিং করে বলেও গুঞ্জন  রয়েছে।  মিটিংয়ে তাকে পূর্বের মতো অর্থ প্রদান ধারাবাহিকভাবে পাবেন বলে তাকে আশ্বস্ত করা হয়। তার বিনিময়ে তিনিসহ তার অন্য সহযোগিরা শেখ হাসিনা বিহীন রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ করার অফার দেওয়া হয় এবং সে আগ্রহের সাথে সম্মতি প্রদান করেছেন বলেও গুঞ্জন ছড়িয়েছে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button