বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের বাইশফাঁড়ি পেয়ারাবুনিয়া সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে দুই পা হারানো বিজিবি নায়েক মো. আক্তার হোসেন অবশেষে মৃত্যুবরণ করেছেন। দেশের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ১৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে তিনি জীবনের মায়া ত্যাগ করেন।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে নায়েক আক্তার হোসেন কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) অধীনস্থ রেজুআমতলী বিওপি-তে অস্থায়ীভাবে সংযুক্ত থেকে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওইদিন সকালে পেয়ারাবুনিয়া সীমান্ত এলাকায় টহলরত অবস্থায় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে তিনি গুরুতর আহত হন।
আহত অবস্থায় প্রথমে তাঁকে রামু সেনানিবাসের সিএমএইচে নেওয়া হয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরদিন বিজিবির হেলিকপ্টারে করে ঢাকার সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দীর্ঘ ১৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার সকালে হঠাৎ তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়। উপস্থিত চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাদাত বিন সিরাজ (ইনটেনসিভিস্ট বিশেষজ্ঞ)-এর তত্ত্বাবধানে টানা ৪৫ মিনিট ধরে CPR দেওয়া হলেও হৃদ্স্পন্দন ফিরে আসেনি। পরে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নায়েক আক্তার হোসেনের মৃত্যুর খবরে পুরো বিজিবি বাহিনীতে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
এ বিষয়ে কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস. এম. খায়রুল আলম (পিএসসি) বলেন, “দেশের সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমরা এক সাহসী সহযোদ্ধাকে হারালাম। নায়েক আক্তার হোসেনের আত্মত্যাগ আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “শহীদ নায়েক আক্তার হোসেন দেশের জন্য আত্মোৎসর্গের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর আত্মার মাগফেরাত ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।”
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়াত নায়েক আক্তার হোসেনের মরদেহ নিজ জেলা ভোলার দৌলতখানে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় দাফন করা হবে।



