যুদ্ধের ভয়াবহতায় গাজার পর আরেক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে সুদানের উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশার। র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) গত ২৬ অক্টোবর শহরটি দখল করার পর ভয়াবহতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। সেখানে নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হচ্ছে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে সুদানে নিযুক্ত জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধি লি ফুং বলেন, গত ১০ দিনে এল-ফাশেরে নৃশংস হামলার সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এটি এখন শোকের শহরে পরিণত হয়েছে। ১৮ মাসের অবরোধ ও সংঘাত থেকে বেঁচে যাওয়া বেসামরিক নাগরিকরা এখন অকল্পনীয় মাত্রার নৃশংসতা সহ্য করে যাচ্ছে।
লি ফুং আরও বলেন, এখানকার হাসপাতাল ও স্কুলে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে আসা শত শত নারী ও শিশু নিহত হয়েছে। কোথাও কোথাও পালানোর সময় পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
জাতিসংঘের এই সতর্কতা এমন সময়ে এলো যখন সাহায্য সংস্থাগুলো জানিয়েছে, উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার মানুষ তাভিলা শহরে ভীষণ দুরাবস্থার মুখোমুখি হচ্ছে।
সুদানের বাস্তুচ্যুত লোকজন ও শরণার্থী শিবির নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর মুখপাত্র অ্যাডাম রোজাল বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষ তাভিলাতে পৌঁছেছে, যাদের প্রায় সবারই খাবার, ওষুধ, আশ্রয়ের উপকরণ ও মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা জরুরি প্রয়োজন।
সাহায্য সংস্থাগুলোর ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বাস্তুচ্যুত লোকজন একটি অনুর্বর এলাকায় রয়েছে। এখানে খুব কমই তাঁবু রয়েছে আর যেগুলো রয়েছে সেগুলো তারপুলিন ও চাদর দিয়ে জোড়াতালি দেওয়া। এ বিষয়ে অ্যাডাম রোজাল বলেন, ‘কিছু পরিবার দিনে শুধুমাত্র একবার খেয়ে বেঁচে আছে।’
শুক্রবার ফ্রান্সের সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এক প্রতিবেদনে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে উচ্চ মাত্রার অপুষ্টির কথা জানিয়েছে। সুদানে নিযুক্ত নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের (এনআরসি) অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার মাথিল্ড ভু বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, তাভিলার বহু পরিবার তাদের চলে আসার সময় সঙ্গে করে অন্যের শিশুসন্তানদেরও নিয়ে এসেছে।
মাথিল্ড ভু বলেন, ‘এর অর্থ হচ্ছে এমন শিশুদের নিয়ে আসা হচ্ছে, যারা পথে তাদের মা-বাবাকে হারিয়েছে। হয় তারা উধাও হয়ে গেছে বা বিশৃঙ্খলার মধ্যে হারিয়ে গেছে, অথবা তাদের আটক করা হয়েছে কিংবা হত্যা করা হয়েছে।’



