সোমবার বহুপ্রতীক্ষিত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমান সেতু’ উদ্বোধন
অনলাইন ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (১০ অক্টোবর ২০২২) নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে নির্মিত বহুপ্রতীক্ষিত ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম নাসিম ওসমান সেতু’ উদ্বোধন করবেন
২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বন্দরের মদনগঞ্জ ও সদরের সৈয়দপুর এলাকায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার নাম দেয়া হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতু। প্রায় সোয়া কিলোমিটার দীর্ঘ ছয় লেনের সেতুটির উদ্বোধন করা হবে সোমবার।
নাসিম ওসমান সেতু বন্দরবাসীর স্বপ্নের সেতু। নারায়ণগঞ্জ শহরের সবচেয়ে সন্নিকটে হলেও শীতলক্ষ্যা নদীর কারণে দুভাগে বিভক্ত বন্দর উপজেলা। তিন দিকে নদীবেষ্টিত সম্ভাবনাময় বন্দর উপজেলা বরাবরই অবহেলিত একটি সেতুর অভাবে। সেই অভাবটি পূরণ করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে সরকারপ্রধানরা ওয়াদা করেও সেতু করেননি।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একে এম শামীম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে অনেক কাজ চলছে। কাজগুলো হয়ে গেলে ঢাকাকে বলব, নারায়ণগঞ্জ এসে দেখে যান আমরা কারা। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশে ভালো কাজ করার মানুষ আছে আবার খারাপ কাজ করার লোকও আছে। আপনারা চিন্তা করবেন না।
অবশেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা উন্নয়নের জননী শেখ হাসিনার হাত ধরে এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। সেতুটি চালু হলে অর্থনৈতিক সূতিকাগারে পরিণত হবে শীতলক্ষ্যা নদীর দুই তীর তথা বন্দর ও নারায়ণগঞ্জ। ইতিমধ্যেই সেতুকে ঘিরে অসংখ্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এখান থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম যেতে কয়েক ঘণ্টা সময় বাঁচবে। তাই ব্যবসায়ীদের দৃষ্টি এখন নারায়ণগঞ্জ বন্দরকে ঘিরে।
প্রায় সোয়া কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৬০৮ কোটি টাকা। ছয় লেনের এই সেতুর চারটি লেনে চলবে দ্রুতগতির যান, বাকি দুটি দিয়ে চলবে রিকশা-সাইকেলের মতো ধীরগতির বাহন। দুই পাশের রেলিং ঘেঁষে রয়েছে ফুটপাত। তাই হেঁটেও পাড়ি দেয়া যাবে।
সেতুটি চালু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাড়কের সঙ্গে পদ্মা সেতুর দূরত্ব কমবে ৯ কিলোমিটার। তখন বন্দর উপজেলার মদনপুর দিয়ে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর হয়ে শ্রীনগরের ছনবাড়ি পয়েন্টে সেতুর সড়কপথ যুক্ত করবে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা সুপার এক্সপ্রেসওয়েকে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের নারায়ণগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী ইকবাল জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগড়াপাড়া ও মদনপুর এবং ঢাকা সিলেট মহাসড়কের যানবাহনগুলো এশিয়ান হাইওয়ে সড়ক হয়ে সরাসরি বন্দরের রাস্তায় উঠবে। এরপর মুক্তারপুর হয়ে পদ্মা সেতুর ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা সুপার এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের ছনবাড়ী পয়েন্টে সংযুক্ত হতে পারবে। ফলে এসব পথের যানবাহনের সময় বাঁচবে প্রায় দুই ঘণ্টা।
নাসিম ওসমান সেতু (তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু ) দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, ‘সেতুটিকে ঘিরে মেঘনার বিভিন্ন চর অঞ্চলে অর্থনীনৈতিক জোন তৈরি হচ্ছে। বন্দরের বিভিন্ন এলাকায় কলকারখানা স্থাপন করা হচ্ছে। ফলে এসব এলাকায় যেমন কর্মসংস্থান বাড়বে, তেমনি দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে।’