বান্দরবানের গহিন জঙ্গল থেকে ৯ জঙ্গি গ্রেপ্তার
রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবান প্রতিনিধি
বান্দরবানের টংকাবতী এলাকা থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র, বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি, গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (১৩ মার্চ) সকাল ১১টার সময় বান্দরবান জেলা পরিষদের হলরুমে এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার মধ্যরাতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠনটির পার্বত্য অঞ্চলের প্রশিক্ষণ কমান্ডার দিদার হোসেন চম্পাইসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ১। মোঃ দিদার হোসেন (২৫), ২। আল আমিন সর্দার (২৯), ৩। সাইনুন (২১), ৪। তাহিয়াত চৌধুরী (১৯), ৫। মোঃ লোকমান মিয়া (২৩), ৬। মোঃ ইমরান হোসেন (৩৫), ৭। মোঃ আমির হোসেন (২১), ৮। মোঃ আরিফুল রহমান (২৮), ৯। শামিম মিয়া (২৪)। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ।
এর আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিরুদ্দেশ হওয়া কয়েকজন তরুণের বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনটির খোঁজ পাওয়ার পর গত বছরের অক্টোবর থেকে পাহাড়ে র্যাবের এই অভিযান চলছে। ওই সময় থেকে ধারাবাহিক অভিযানে বিভিন্ন সময়ে ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’-এর অনেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।
পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ বা বম পার্টির সম্পৃক্ততা রয়েছে এই জঙ্গি সংগঠনটির সঙ্গে জানিয়ে র্যাব জানায়, জঙ্গি সংগঠনটির শীর্ষ পর্যায়ের দুই নেতাকে কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা থেকে তারা গ্রেপ্তার করে। পাহাড়ে-সমতলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তাড়া খেয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিল জঙ্গিরা।
অন্যদিকে জঙ্গি সংগঠনটির চার সদস্যকে গত ১ মার্চ চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব জানায়, তাদের মধ্যে একজন ধর্মান্তরিত মুসলিম রয়েছেন। ‘সংগঠনটির আমিরের নির্দেশে’ তারা পার্বত্যাঞ্চল ছেড়ে সমতলে নেমে এসেছিলেন বলে র্যাব জানিয়েছে।
র্যাবের সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় হিজরতের নামে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয় ১৯ জেলার ৫৫ তরুণ। এ তরুনদের অনেকেই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে নতুন করে কথিত হিজরতের নামে ঘরছেড়ে জামাতুল আনসারের হয়ে পাহাড়ি এলাকার আস্তানায় আশ্রয় নেয়। এসব আস্তানায় হিজরত করা তরুণদের ভারি অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেয় একটি পাহাড়ী সন্ত্রাসীদল ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ (কেএনএফ)।
জঙ্গি সংগঠনটির কতজন সদস্য, নেতৃত্বে কারা কিংবা কী পরিমাণ অস্ত্র রয়েছে তাদের হাতে, সেসব নিয়ে এখনও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। তদন্তে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।