জীবনধারা

যে ভাবে ই-পাসপোর্ট করবেন

মোহনা অনলাইন

প্রথমেই জানতে হবে ই-পাসপোর্ট কি

ই-পাসপোর্ট বা ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট হলো একটি বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট, যাতে একটি ইলেকট্রনিক চিপের

মধ্যে পাসপোর্টধারীর পরিচয় সনাক্তকারী বিভিন্ন বায়মেট্রিক তথ্য সংরক্ষিত থাকে। ই-পাসপোর্টে একজন

ব্যক্তির বায়োমেট্রিক ও বায়োগ্রাফিক সর্বমোট ৪১টি তথ্য থাকবে। এই তথ্যগুলোর মধ্যে ২৬টি তথ্য খালি চোখে

দেখা যাবে। ই-পাসপোর্টে ২টি বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে যেগুলো বিশেষ যন্ত্র ছাড়া বুঝা যাবে না ফলে সমগ্র

বিশ্বে বাংলাদেশের পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা আরো বাড়বে।

ই-পাসপোর্ট দেখতে বর্তমানে চলমান মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (MRP) মতই। ই-পাসপোর্টে আগের

পাসপোর্টের শুরুতে বিদ্যমান পাসপোর্টধারীর ব্যক্তিগত তথ্যের দুইটি পৃষ্ঠার পরিবর্তে পলিমারের তৈরি একটি

চিপের মধ্যে তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ই-পাসপোর্ট কোথায় পাবেন

প্রথম পর্যায়ে শুধুমাত্র উত্তরা, আগারগাঁও ও যাত্রাবাড়ী থেকে ই-পাসপোর্ট প্রদান করা হবে। পর্যায়ক্রমে

সারাদেশ এবং বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীরাও ই-পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় পাসপোর্ট নিতে পারবেন। ই-

পাসপোর্টের পাশাপাশি এমআরপি পাসপোর্টও কার্যকর থাকবে এবং ঢাকা ও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে

আগের মতই পাসপোর্ট করা যাবে।

ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম

ই-পাসপোর্ট পোর্টাল https://epassport.gov.bd থেকে পাসপোর্ট করা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানার পাশাপাশি

অনলাইনেই ই-পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন। ৫টি সহজ ধাপে ই-পাসপোর্ট আবেদন থেকে শুরু করে

পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।

ধাপ :

প্রথমেই জেনে নিন আপনার বসবাসরত জেলা কিংবা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু

হয়েছে কি না। শুরুতে বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস ও পর্যায়ক্রমে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এবং বিদেশে

বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। নিজ জেলাতে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু

হলে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে এই লিংকে ক্লিক করে আপনার বর্তমান ঠিকানা অনুযায়ী জেলা ও থানার

নাম তালিকাভুক্ত করুন এবং বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিস অথবা দূতাবাসের তালিকা থেকে নির্দিষ্ট অফিস

নির্বাচন করুন।

ধাপ :

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ করুন এবং সময় বাঁচাতে অনলাইন পেমেন্ট অপশন নির্বাচন

করুন। অনলাইন এবং পিডিএফ ফরম পূরণের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট আবেদন করা যায়। পিডিএফ আবেদন

প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে পিডিএফ এডিটরের মাধ্যমে আবেদন ফরম পূরণ করে প্রিন্ট করে নিন। পূরণকৃত ফরম প্রিন্ট

করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ (জাতীয় পরিচয় পত্র, পুরাতন পাসপোর্ট [যদি থাকে]) সহ আপনার নির্বাচিত

পাসপোর্ট অফিস কিংবা দূতাবাসে যোগাযোগ করুন। মনে রাখা জরুরী, হাতে লেখা কোন আবেদন গ্রহণযোগ্য

নয়, আবেদন ফরম অবশ্যই কম্পিউটারে পূরণ করতে হবে। আর বর্তমানে শুধুমাত্র অনলাইনেই আবেদন করা

যায়।

ধাপ :

আপনার পাসপোর্টের ধরণ অনুযায়ী নির্দিষ্ট পাসপোর্ট ফি প্রদান করুন। পাসপোর্ট এপ্লিকেশনের প্রক্রিয়া শেষে

নির্দিষ্ট ব্যাংকে কিংবা অনলাইনে ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ কিংবা অন্য নির্বাচিত মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি প্রদান করা

যাবে। ব্যাংকে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে গেলে পাসপোর্ট আবেদনপত্র সঙ্গে নিতে হবে।

ধাপ :

আবেদন ফরম পূরণ ও পাসপোর্ট ফি প্রদানের পর তালিকাভুক্তি এবং ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্টের তথ্য প্রদানের

জন্য নির্বাচিত পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করুন। ছবি ও ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য যাওয়ার সময় আবেদন

ফরমের প্রিন্ট কপি, পাসপোর্ট ফি পেমেন্ট স্লিপ, জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম সনদ, পুরাতন পাসপোর্ট (যদি

থাকে) এবং অন্যান্য সহায়ক কাগজপত্র সঙ্গে নিন। আপনার বর্তমানে ঠিকানা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট

অফিসে আবেদন করুন। পাসপোর্ট অফিসে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়াদি যাচাই করা হয়।

  • কাগজপত্র ও ব্যক্তিগত তথ্য
  • আবেদনকারীর তোলা ছবি
  • আঙ্গুলের ছাপ ও আইরিশের ছবি গ্রহণ
  • পাসপোর্ট ফি পরিশোধের রিসিট

পাসপোর্ট অফিসে তালিকাভুক্তির পর সরবরাহকৃত ডেলিভারি স্লিপ/রশিদ নিরাপদে সংরক্ষণ করুন। পাসপোর্ট

গ্রহণের সময় ডেলিভারি স্লিপ/রশিদ প্রর্দশন করা বাধ্যতামূলক।

ধাপ :

আবেদনকারীকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ডেলিভারি রশিদ ও পুরাতন পাসপোর্ট (যদি থাকে) দেখিয়ে পাসপোর্ট

সংগ্রহ করতে হয়। পাসপোর্ট প্রদানের সময় আবেদনকারীর ফিঙ্গারপ্রিন্টের সাথে এনরোলমেন্টের ফিঙ্গার

প্রিন্টের মিল আছে কি না তা পরীক্ষণ করা হয়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে (১১ বছরের কম বয়সী শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি)

উপযুক্ত বাহকের কাছে পাসপোর্ট প্রদান করা হয়ে থাকে।

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button