আগামীকার রোববার (৩০ এপ্রিল) সারাদেশে ২০২৩ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে । ২০২৩ সালের সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে শিক্ষা বোর্ডগুলো ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে নেওয়া হয়েছে নানামুখী উদ্যোগ।
এদিকে এবারের পরীক্ষায় মোট ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন। ১০ লাখ ২১
হাজার ১৯৭ জন ছাত্র ও ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ জন ছাত্রী মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি ও
সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গত বছরের তুলনায় ৫০ হাজার ২৯৫ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে। এর
মধ্যে বিজ্ঞানেই বেড়েছে ৩৭ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী। আর ছাত্রী বেড়েছে ৩৮ হাজার ৬০৯ জন। গতবার
এসএসসি ও সমমানে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ২০ লাখ ২১ হাজার।
জানা গেছে, নির্ধারিত দিনে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১ টা পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা চলবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী এবং
পরে রচনামূলক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা শুরু ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে পরীক্ষার্থীদের।
বহুনির্বাচনী ও রচনামূলক বা সৃজনশীলে আলাদা আলাদাভাবে পাস করতে হবে। পরীক্ষার্থীরা সাধারণ
সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবেন। কেন্দ্রসচিব ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মুঠোফোন
ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষার্থী ছাড়া ২০০ গজের মধ্যে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ
ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে পরীক্ষা দিতে অতিরিক্ত সময় পাবেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল
পালসিজনিত প্রতিবন্ধকতা ও হাত না থাকা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা শ্রুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে চলতি
বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী
পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল
পালসিতে ভোগা পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বৃদ্ধিসহ শিক্ষক, অভিভাবক, সাহায্যকারীর বিশেষ
সহায়তায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
৩০ এপ্রিল শুরু হয়ে ২৩ মে পর্যন্ত চলবে এসএসসির লিখিত পরীক্ষা। আর ২৪ থেকে ৩০ মের মধ্যে ব্যবহারিক
পরীক্ষা নেয়া হবে। ৩০ এপ্রিল থেকে দাখিল পরীক্ষা শুরু হয়ে চলবে ২৫ মে পর্যন্ত। আর ২৭ মে থেকে ৩
জুনের মধ্যে দাখিলের ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া হবে। ৩০ এপ্রিল থেকে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালের
লিখিত পরীক্ষা শুরু হয়ে চলবে ২৩ মে পর্যন্ত। ২৫ মে থেকে ৪ জুনের মধ্যে ব্যবহারিক পরীক্ষা এবং ৫ জুন
থেকে ১৫ জন পর্যন্ত বাস্তব প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে।
সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা আয়োজনে গত বুধবার থেকে সব কোচিং বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। আগামী ২৩ মে পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বিশেষ সুবিধা প্রাপ্য নন এমন কোনো শিক্ষার্থী বিশেষ সুবিধা পাবেন না।
আমাদের ম্যানুয়ালে আছে এমন অসুস্থতার কারণে কোনো পরীক্ষার্থীর যদি বিশেষ সুবিধা পাওয়া সুযোগ না
থাকে, তাহলে কোনো পদাধীকারী ব্যক্তির পুত্র বা কন্যা কোনোভাবেই সে সুবিধা পেতে পারেন না। অভিযোগ
পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেব। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অনিয়ম করলে কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
নয়টি সাধারণ ধারার শিক্ষা বোর্ড থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ২৭৫ জন।
তাদের মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭০ জন। আর ছাত্রী ৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪০৫ জন। মোট ১৭ হাজার
৭৮৬টি স্কুল থেকে এসব শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন। তারা ২ হাজার ২৪৪টি কেন্দ্র থেকে
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেবেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ১২১ জন পরীক্ষার্থী। এদের মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৩
জন। আর ছাত্রী ১ লাখ ৫১ হাজার ১২৮ জন। এবার ৯ হাজার ৮৫টি মাদরাসা থেকে পরীক্ষার্থীরা দাখিল
পরীক্ষায় অংশ নেবেন। মোট ৭১৬টি কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১ লাখ ২৭ হাজার
৭৬৭ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯৭ হাজার ৩৩৪ জন আর ছাত্রী ৩০ হাজার ৪৩৩ জন। মোট ২ হাজার
৯২৭টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষার্থীরা এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
তারা মোট ৮৫০টি কেন্দ্রে এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
নয়টি সাধারণ বোর্ডের মধ্যে ঢাকা বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ৪ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৩ জন
পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯১ জন আর ছাত্রী ২ লাখ ২২ হাজার ৭৫২ জন। ৩ হাজার
২৬৯টি স্কুলের এসব শিক্ষার্থী ঢাকা বোর্ডের অধীনে থাকা ৪৩১টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
রাজশাহী বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ২ লাখ ৫ হাজার ৮০২ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে
ছাত্র ১ লাখ ৬ হাজার ২২৩ জন আর ছাত্রী ৯৯ হাজার ৫৭৯ জন। ২ হাজার ৬৭৮ টি স্কুলের এসব শিক্ষার্থী
রাজশাহী বোর্ডের অধীনে থাকা ২৬৫ টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
কুমিল্লা বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ১০৬ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র
৭৭ হাজার ৪৫৬ জন আর ছাত্রী ১ লাখ ৭ হাজার ৬৪১ জন। ১ হাজার ৭৭৬ টি স্কুলের এসব শিক্ষার্থী কুমিল্লা
বোর্ডের অধীনে থাকা ২৭২ টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
যশোর বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭৯৫ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র
৭৮ হাজার ৪৯৩ জন আর ছাত্রী ৭৯ হাজার ৩০২ জন। ২ হাজার ৫৪৮ টি স্কুলের এসব শিক্ষার্থী যশোর বোর্ডের
অধীনে থাকা ২৯৩ টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
চট্টগ্রাম বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৬৯১ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে
ছাত্র ৬৮ হাজার ২২১ জন আর ছাত্রী ৮৬ হাজার ৪৭০ জন। ১ হাজার ১০৭ টি স্কুলের এসব শিক্ষার্থী এ বোর্ডের
অধীনে থাকা ২১৬ টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
বরিশাল বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ৯১ হাজার ৮০০ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৪৩
হাজার ৭২৭ জন আর ছাত্রী ৪৮ হাজার ৭৩ জন। ১ হাজার ৪৭৫ টি স্কুলের এসব শিক্ষার্থী এ বোর্ডের অধীনে
থাকা ৯১ টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
সিলেট বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১ লাখ ৯ হাজার ৮২০ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র
৪৫ হাজার ৩০৬ জন আর ছাত্রী ৬৪ হাজার ৫১৪ জন। ৯৩১ টি স্কুলের এসব শিক্ষার্থী বোর্ডের অধীনে থাকা
১৪৯ টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
দিনাজপুর বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ২ লাখ ১ হাজার ৮০২ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে
ছাত্র ১ লাখ ১ হাজার ৫৯৮ জন আর ছাত্রী ৯৯ হাজার ৭৬১ জন। ২ হাজার ৭০৩ টি স্কুলের এসব শিক্ষার্থী
বোর্ডের অধীনে থাকা ২৭৭ টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
ময়মনসিংহ বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১ লাখ ২৩ হাজার ২৫৯ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে
ছাত্র ৬১ হাজার ৯৪৬ জন আর ছাত্রী ৬১ হাজার ৩১৩ জন। ১ হাজার ২৯৯ টি স্কুলের এসব শিক্ষার্থী বোর্ডের
অধীনে থাকা ১৫০ টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।