রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে দেশটির ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার। গোষ্ঠীটির প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন জানিয়েছেন, তার সেনারা ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সীমান্তে প্রবেশ করেছে এবং রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিচারের জন্য ‘যতদূর প্রয়োজন’ তিনি যাবেন। এর আগে কিছু আগেই প্রিগোজিনকে ‘বিদ্রোহী’ আখ্যা দিয়েছে মস্কো। পুরো বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন পুতিন এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
হঠাৎ কেন এমন পরিস্থিতি, তা এখনও অস্পষ্ট। কিন্তু সম্প্রতি নানা কারণে পুতিনের প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে তা বলায় যায়। নতুন করে উত্তেজনা নিয়ে শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এসেছে, রাশিয়ার সশস্ত্র ভাড়াটে বাহিনীটির প্রতিষ্ঠাতা প্রিগোজিন পুতিনের সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ দাঁড় করিয়েছেন। তার দাবি, একটি ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ওয়াগনারের অনেক যোদ্ধাকে হত্যা করেছে রুশ বাহিনী। এর বদলা নিতে রাশিয়ার কয়েক হাজার সেনাকে শাস্তি দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন তিনি। পরে টেলিগ্রামে এক পোস্টে তিনি আরও বলেছেন, ‘সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তার সমালোচনা ছিল একটি ‘বিচারের পদযাত্রা’ কোনও অভ্যুত্থান নয়। ’
তার যোদ্ধারা ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের রুশ নগরী রোস্টভে প্রবেশ করেছে এবং যারাই তাদের থামানোর চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধেই তিনি যুদ্ধ করবেন। শুক্রবার রাতে মস্কোর সরকারি ভবন, পরিবহন সুবিধা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অঘটন ঠেকাতে পথে পথে নিরাপত্তা বাহিনীর সাজোঁয়া যানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে রাশিয়ান যৌথ বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিন শুক্রবার ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধাদের মস্কোর বিরুদ্ধে তাদের ‘বিদ্রোহ’ বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে ওয়াগনারের উদ্দেশে সুরোভিকিন বলেন, ‘আমরা একসাথে কঠিন পথে হেঁটেছি। আমরা একসঙ্গে লড়েছি, একসঙ্গে ঝুঁকি নিয়েছি, একসঙ্গে পরাজয় সহ্য করেছি এবং একসঙ্গে জিতেছি। আমরা একই রক্তের মানুষ, আমরা যোদ্ধা। আমি ওয়াগনারের যোদ্ধা এবং কমান্ডারদের কাছে আবেদন করছি আপনারা থামুন। শত্রুরা শুধু অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার অপেক্ষায় আছে। দেশের এই কঠিন সময়ে শত্রুদের ফাঁদে পা দেওয়া উচিত নয়। ’
এদিকে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) সশস্ত্র বিদ্রোহের জন্য তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ এনেছে বলে রুশ সংবাদ সংস্থা তাস। সামরিক শীর্ষস্থানীয়দের মধ্যে দীর্ঘদিনের চলমান অচলাবস্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এর আগে বিভিন্ন সময় রাশিয়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, সেনাপ্রধানসহ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন প্রিগোজিন।
সূত্র: রয়টার্স, সিএনএন, আরটি।