জীবনধারা

লটকনের যত পুষ্টিগুণ

অনলাইনে ডেস্ক

হলুদ রঙের ছোট্ট গোলাকার একটি ফল লটকন। যার রয়েছে অসংখ্য পুষ্টিগুণ। লটকন দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমন সুস্বাদু।

লটকনে রয়েছে এমন কিছু পুষ্টিগুণ যা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ছোট-বড় সকলের জন্য আদর্শ ফল হচ্ছে লটকন। বর্ষার মৌসুমে এই ফলটি বাজারে বেশি পাওয়া যায়।

লটকনে রয়েছে এমন সব উপাদান যা কোলন ক্যান্সারসহ নানা জটিল ও কঠিন অসুখ সারাতে সাহায্য করে। তাই এ সময় সুস্থ থাকতে প্রচুর পরিমাণে লটকন খাওয়া প্রয়োজন।

চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক লটকনের গুণাগুণ সম্পর্কে:

 

  •  এই ফলে নানা রকম খনিজ উপাদান আছে। যেমন- পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ক্রোমিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম উল্লেখযোগ্য। এসব উপাদান শরীরকে সুস্থ রাখে। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৯ গ্রাম ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্রোমিয়াম থাকে
  • ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ সমৃদ্ধ ফল লটকন। লটকনে ভিটামিন বি-১ এর পরিমাণ হলো ১০.০৪ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন বি-২ আছে ০.২০ মিলিগ্রাম। বেরিবেরি রোগ থেকে দূরে রাখে লটকন।
  • এ ছাড়াও শারীরিক দূর্বলতা, বুক ধড়ফড় করা, হাত-পায়ে ব্যথা, ঠোঁট এবং পায়ের তালু ফাটা, ঠোঁট ও মুখের ঘা এবং বারবার গলা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যায় যারা ভুগছেন লটকন তাদের জন্য আদর্শ একটি পথ্য।
  • রক্ত ও হাড়ের জন্য বিশেষ উপকারী লটকন। কারণ এতে থাকে আয়রন। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৫.৩৪ মি.গ্রা আয়রন থাকে।
  • লটকনে থাকা উপাদানসমূহ কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় বলে নিশ্চিত করেছেন গবেষকরা।
  • খাদ্যশক্তির ভালো উৎস লটকন। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ৯২ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়। যা কাঁঠালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
  • লটকনে আরো আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম। যা দেহ গঠন ও কোষকলার সুস্থতায় কাজে লাগে। এসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • এ ছাড়াও লটকনে কিছু পরিমাণে প্রোটিন ও ফ্যাট পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ১.৪২ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৪৫ গ্রাম ফ্যাট থাকে।
  • নিয়মিত লটকন খেলে বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন চর্মরোগ থেকেও রক্ষা পাবেন। কারণ লটকন একটি ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল। এতে ভিটামিন সি থাকায় চর্মরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • বমি বমিভাব দূর করতে পারে লটকনে থাকা পুষ্টিগুণ। পাশাপাশি মানসিক অবসাদ দূর করতেও সাহায্য করে লটকন।
  • এ ছাড়াও গরমে তৃষ্ণা মিটাতেও সক্ষম লটকন। কারণ এতে জলীয় অংশের পরিমাণ বেশি। এমনকি ডিহাইড্রেশন কাটিয়ে উঠতেও লটকন সাহায্য করে।
  • রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে লটকন। কারণ এই ফলের মধ্যে অতিরিক্ত চিনি নেই। এর ফলে ডায়াবেটিস রোগীরাও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন এই ফলল খেয়ে।
  • ফলের পাশাপাশি লটকনের পাতাও ওষুধি কাজ করে। এর পাতা ও শিকড় খেলে পেটের নানারকমের অসুখ ও জ্বর ভালো হয়ে যায়।
  • লটকনের বীজ গনোরিয়া রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। ডায়ারিয়া দূর করতে লটকনের পাতার গুঁড়ো কার্যকরী।
  • লটকনের নানারকম গুণ থাকার পরও একবারে বেশি লটকন না খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। কারণ এতে করে অনেক সময় ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে।

পুষ্টিবিদদের মতে, লটকনে কোনো ক্ষতিকর উপাদান নেই। ছোট বড় সবাই এই ফলটি খেতে পারেন। প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ উপাদান আছে লটকনে। তাই আমাদের এই বর্ষা মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে লটকন খাওয়া প্রয়োজন। 

author avatar
Editor Online
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button