সম্প্রতি সোনালী ব্যাংক মিয়ানমারের দুটি বড় ব্যাংকের সম্পদ জব্দ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এখন রাখাইন রাজ্যের মংডু হয়ে বাংলাদেশে খাদ্যপণ্য রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) ইয়াঙ্গুনভিত্তিক সংবাদ সংস্থা মিয়ানমার নাউ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১ সেপ্টেম্বর দেশটির সামরিক সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চাল, মটরশুঁটি, চীনাবাদাম এবং পেঁয়াজসহ নিষিদ্ধ পণ্যগুলো শুধু রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তয়ের বাণিজ্যিক অঞ্চলের মধ্য দিয়ে পাঠাতে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এই আদেশটি গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করেছে মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে জান্তা সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য বিভাগের মহাপরিচালক মিন্ট থুরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এতে মানুষ ও পণ্য পাচার হতে পারে। তাই চোরাচালান রুখতে সিত্তওয়ের মধ্য দিয়ে রফতানি করতে হবে।
এর আগে চলতি বছরের জুনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রেজারি মিয়ানমারের সামরিক সরকার নিয়ন্ত্রিত দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান মিয়ানমার ফরেন ট্রেড ব্যাংক (এমএফটিবি) ও মিয়ানমার ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (এমআইসিবি) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ সময়ে তাদের সোনালী ব্যাংকের কাছে থাকা সব মিলিয়ে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি সম্পদ জব্দ হয়ে যায়।
মিয়ানমার নাউ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমএফটিবি এবং এমআইসিবির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর তাদের এই সম্পদ জব্দ করতে বড় রকমের চাপ সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এই দুই ব্যাংকের মাধ্যমেই মিয়ানমারের বেশির ভাগ লেনদেন সম্পন্ন হয়।
১৯৯৫ সালে তখনকার সামরিক শাসকের আমলে এ ধরনের লেনদেনের বিষয়ে প্রথম চুক্তি স্বাক্ষর করে এমআইসিবি ও সোনালি ব্যাংক। যার মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ত্বরান্বিত হয়।
এ বিষয়ে রাখাইন রাজ্যের চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান টিন অং ওও বলেছেন, এই বিধিনিষেধগুলো রাজ্যের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে না। কারণ, এখনও সিত্তওয়ের মাধ্যমে পণ্য রফতানি করা যেতে পারে।
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে আগস্টের মধ্যে মংডু হয়ে বাংলাদেশে রফতানি করা পণ্যের মোট মূল্য ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।