বিভিন্ন অপরাধে একের পর এক মৃত্যুদ- কার্যকর করছে সৌদি আরব। চলতি বছরে ইতিমধ্যেই শতাধিক ব্যক্তিকে ঝোলানো হয়েছে ফাঁসিতে। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-র এমন রিপোর্ট ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পশ্চিম এশিয়ার দেশটিতে মানুষের অধিকার খর্ব হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে এ সংস্থা।সৌদিতে মৃত্যুদণ্ড – কার্যকর হওয়া সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সেই রিপোর্টে প্রকাশ্যে এসেছে মানবাধিকার লংঘনের তথ্য। অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, সোশাল মিডিয়ায় সরকারি বিরোধী পোস্ট বা খুব অল্প পরিমাণে মাদক পাচারের মতো অপরাধেও মৃত্যুদ- কার্যকর করেছে সৌদি প্রশাসন। যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। সৌদি প্রশাসন যেভাবে গণহারে ফাঁসি দিচ্ছে, তাতে নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
যুব সমাজ বিশেষত ১৮ বছরের নীচে যাদের বয়স, তারা ভয় ভয় দিন কাটাচ্ছেন,’ রিপোর্টে উল্লেখ করেছে অ্যামনেস্টি। এই প্রসঙ্গে বেশ কিছু উদাহরণ দিয়েছে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ওই বেসরকারি সংস্থা। তাদের দাবি, গত অগাস্টে মোহাম্মদ বিন নাসের অল-ঘামদি নামের এক অবসরপ্রাপ্ত এক স্কুলশিক্ষকের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়। সোশাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের পোস্ট করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। চার্জশিটে মোহাম্মদ বিন নাসেরের বিরুদ্ধে ধর্মের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা ও সমাজে অশান্তি তৈরির মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, ঘন ঘন মৃত্যুদ- কার্যকর করার নেপথ্যে রয়েছে সৌদি মোহাম্মদ বিন সালমানের হাত। এইভাবে সমস্ত বিরুদ্ধ কণ্ঠকে নির্মূল করতে চাইছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৫ থেকে কার্যত সৌদি শাসন করছেন যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমান। নিজেকে আধুনিকীকরণের কান্ডারি হিসেবে তুলে ধরতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও সৌদি উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিপন্ন করার পরিকল্পনাও রয়েছে তার। প্রসঙ্গত, বছর কয়েক আগে মৃত্যুদ- কার্যকর করার সংখ্যা কমানোর প্রতিশ্রুতি দেন সৌদি যুবরাজ। যে অপরাধে কোনও সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি, সেখানে ফাঁসি দেয়া হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। উল্টো তার আমলে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে বলে মিলেছে তথ্য। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-য় মোহাম্মদ বিন সালমান শাসনভার হাতে তুলে নেয়ার পর থেকে সৌদিতে বছরে গড়ে ১২৯ জনের ফাঁসি দেয়া হচ্ছে। গত বছর এই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ায় ১৯৬-তে। গত ৩০ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।