সৌদি আরব রিয়াদ হোটেল ফয়সেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৫-তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগের ভূয়ষী প্রশংসা করেছে বিশ্ব ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত ইউনেস্কোর সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী পরিষদ।
১০ সেপ্টেম্বর ইউনেস্কোর ৪৫তম সভা শুরু হয়েছে। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের সুন্দরবন নিয়ে আলোচনা হয়। এতে বিগত একদশক সময়ে সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে গভীর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে বিশ্বে ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত ইউনেস্কোর সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী পরিষদ। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে চলমান ৪৫-তম বর্ধিত সভায় এই সিদ্ধান্তটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। আগামি ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সভা চলমান থাকবে এবং প্রতিদিন বিশ্বে চলমান পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে জানা যায়।
২০১৩ সালে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা রামপালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মিতব্য কয়লা ভিত্তিক মৈত্রী সুপার তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কের প্রেক্ষিতে এই পরিষদ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে এই বিদ্যুতকেন্দ্রসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চলমান উন্নয়ন কর্মকে টেকসই উন্নয়ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে, উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি পরিবেশগত সংরক্ষণে সরকারের কর্মকান্ড বজায় রাখার বিষয়ে পরিষদ পরামর্শ দেয়।
সভায় ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ইউনেস্কোর স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহা বিশ্ব ঐতিহ্য পরিষদের সকল সদস্যদের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘এই অর্জন বিগত দেড় দশকে বৈশ্বিক জলবায়ু সংরক্ষণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রণী ও নেতৃত্বের আরও একটি স্বীকৃতি’। এই স্বীকৃতি বাংলাদেশকে তার টেকসই উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রাস্ট্রদুত বলেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সংরক্ষণ প্রতিবেদেন প্রদানের বাধ্যবাধকতা থেকে অবমুক্তি লাভ করেছে। ২০১৩ সাল হতে অদ্যাবধি বাংলাদেশ সাত বার এই প্রতিবেদন প্রদান করেছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের এই দরকষাকষি প্রক্রিয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ডঃ তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীরবিক্রম নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বন, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ, নৌপরিবহন সচিব মোস্তফা কামাল, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ফাইয়াজ মুরশিদ কাজীসহ একটি কার্যকরীদল বাংলাদেশের কারিগরী অবস্থান নির্ধারণে নিরলস কাজ করছেন এবং ইউনেস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধিকে কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন।
ইউনেস্কো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ এবং বিভিন্ন দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিগণ এই অর্জনকে বাংলাদেশের অনুকরণীয় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত করেন।