জনগণ অপছন্দ করলে কোনো রাজনৈতিক দলই বাঁচাতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, আজকের আন্দোলনটা বিএনপি-গণঅধিকার পরিষদের নয়, এটা জনগণের আন্দোলন। প্রত্যেকটা মানুষ নিষ্পেষিত, তারা প্রতিদিন ধাক্কা খাচ্ছে। অন্যায়ের শিকার হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জিনিসপাতির দাম লাগামহীন, ঘরে ঘরে অভাব। চুয়াত্তর সালের মতো কঙ্কালসার দেহ এখনো দেখা যায়। এই সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকটা দেউলিয়া করে দিছে। তারপরও এত সখ কেন ক্ষমতার থাকার? দেশটা তো খেয়ে ফেলছে। সামনে ভয়াবহ সময় আসছে।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) প্রেস ক্লাবে আয়োজিত গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আয়োজনে ‘সংবিধান ও গণতন্ত্র: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া বলেন, নির্বাচন নিয়ে দুইবার প্রতারণার শিকার হয়ে তৃতীয়বার আবার সেই আওয়ামী লীগের প্রতারণার ফাঁদে পা দেবে না কেউ। এবার কিছু দালাল ছাড়া তাদের সঙ্গে আর কেউ থাকবে না।
‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই, বিরোধীদলকে বলতে চাই এইবারের নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় আছেন কী ধরনের নির্বাচন দিয়ে সেটা কিন্তু তিনি স্বীকার করেছেন। ফ্রড (প্রতারণা) ও অত্যাচার করে গত দুইটা নির্বাচন পার করেছে। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে দুইবার ফ্রডের শিকার হয়ে তৃতীয়বার আবার তাদের বিশ্বাস করবে? বাঙ্গালিরা এতটা সহজ নয়। কিছু দালাল আর দালাল দল ছাড়া কেউ থাকবে না।
আওয়ামী লীগ এক সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ক্ষমতায় যাওয়ার সেতু বানিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এই সেতু পার হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেছে। আপনারা দেখবেন, ৯৫তে ক্ষমতায় আসার আগে তারা জ্বালাময়ী বক্তব্য দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। ঐ বক্তব্যগুলোই তাদের শোনানো উচিত। যে আপনারা এবং আপনাদের নেত্রী কী বলেছিলেন।
ইয়াহিয়া খানের জায়গায় শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ কখনোই স্বাধীন হতো না বলে মন্তব্য করেন আলোচনার বিশেষ বক্তা এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু।
তিনি বলেন, সংবিধানের নাম করে বার বার আমাদের ধোঁকা দেওয়া হয়। আমরা বার বার বলি, ইয়াহিয়া ক্ষমতায় না থেকে যদি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতো, তাহলে বাংলাদেশ কোনো দিন স্বাধীন হতো না। কারণ, শেখ হাসিনা যদি ক্ষমতায় থাকতো তাহলে ৭ মার্চ তিনি সমাবেশ করার জন্য অনুমতিই দিতেন না। শেখ মুজিব আঙ্গুল তুলে বক্তব্য কীভাবে দিতেন? এইজন্য আমি বলি ১৯৭৯, ১৯৭০ সালে ভাষণে যেসব দাবি করেছিলেন সেগুলোর সঙ্গে আমাদের দাবির মিল আছে। আর ঐ সময় ইয়াহিয়া ও আইয়ুব যেসব কথা বলেছেন সেগুলোর সঙ্গে বর্তমান সরকার শেখ হাসিনার কথার মিল আছে।
গণঅধিকার পরিষদ (একাংশের) সিনিয়র আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিশেষ অতিথি সিনিয়র আইনজীবী মহসিন রশিদ এবং দলটির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ফারুক হাসানসহ আরও অনেকেই।