‘এটা খালার বাড়ি নয় যে ভারত হেসেখেলে জিতে যাবে’—শ্রীলঙ্কা–ভারতের এশিয়া কাপ ফাইনালের আগে এমনই মন্তব্য করেছিলেন শোয়েব আখতার। তবে শ্রীলঙ্কাকে ভারত যেভাবে হারিয়েছে, কেউ সম্ভবত খালার বাড়িতেও এত আয়েশি সময় পায় না।
শ্রীলঙ্কাকে ১৫.২ ওভারে ৫০ রানে অলআউট করে দিয়ে ৩৭ বলের মধ্যে রান তাড়া করে জিতেছে ভারত। পুরো ম্যাচের স্থায়ীত্ব ছিল মাত্র সাড়ে ২১ ওভার।
শ্রীলঙ্কা ভারতকে ব্যাপক প্রতিন্দ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলবে বলার পর দাসুন শানাকাদের এমন হার দেখে হয়তো কিছুটা বিব্রতও বোধ করছেন শোয়েব। তবে শ্রীলঙ্কাকে বিধ্বস্ত করে শিরোপা জয়ের জন্য ভারতের উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও করেছেন তিনি। বলেছেন, ভারত যে শ্রীলঙ্কাকে এভাবে উড়িয়ে দেবে, তা তিনি ভাবতেও পারেননি। পাশাপাশি দাপটের সঙ্গে এশিয়া কাপ জিতে রোহিত শর্মার দল বিশ্বকাপ শিরোপার অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য তাঁর।
ম্যাচ শেষে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে প্রশংসায় ভাসিয়ে শোয়েব বলেছেন, ‘কী দারুণভাবে ভারত এই টুর্নামেন্টটা জিতেছে। আগের ম্যাচের পর মনে হচ্ছিল, ভারতকে আন্ডারডগ দেখাতে পারে। কিন্তু তেমনটা হয়নি। ভারতকে টুপিখোলা অভিবাদন। ভারত, তোমরা দারুণভাবে জিতেছ।’
৬ উইকেট নিয়ে ভারতকে ম্যাচ জেতানো পেসার মোহাম্মদ সিরাজকে কৃতিত্ব দিয়ে শোয়েব আরও বলেছেন, ‘সিরাজ, আপনি ম্যাচ জিতিয়েছেন। আপনি এটাও ভালো কাজ করেছেন যে প্রাইজমানি মাঠকর্মীদের দিয়ে দিয়েছেন। এটা তাঁদের প্রাপ্য। তবে আপনিও অসাধারণ বোলিং করেছেন। পাশাপাশি বুমরা ও সিরাজের পর হার্দিক পান্ডিয়াও খুব ভালো বোলিং করেছেন। তিনিও উইকেট নিয়েছেন।’
বিশ্বকাপের আগে এই জয়ে ভারত বাকি দলগুলোকে হুমকি দিয়ে রাখল বলেও মনে করছেন শোয়েব, ‘আমর মনে হয়, ভারত বেশ ভালোভাবে (শ্রীলঙ্কাকে) হারিয়ে এবং আত্মবিশ্বাসকে চূড়ায় রেখে বিশ্বকাপে যাবে। বিশ্বকাপের আগে তাদের তিনটি ওয়ানডে আছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সেটি জিততে পারলে ভারত ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে ইউনিট হিসেবে খুবই সুদৃঢ় একটি দল হবে। আমার মনে হয়, তারা এখন শুধু পাকিস্তানের জন্যই নয়, আরও অনেক দেশের জন্যই দুশ্চিন্তার কারণ হবে। কারণ, ভারত বিশ্বকাপের জন্য বার্তা দিয়ে রেখেছে। তারা যেভাবে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে, যেভাবে তাদের বোলিং ইউনিট পারফর্ম করেছে, তা দুর্দান্ত।’
এশিয়া কাপে রোহিতের অধিনায়কত্বও অনেক পরিণত মনে হয়েছে শোয়েবের, ‘রোহিত শর্মার অধিনায়কত্ব বেশ ভালো হচ্ছে। এর আগে তাঁকে খুব বিভ্রান্ত মনে হচ্ছিল। এখন তাঁর অধিনায়কত্ব বোঝা যাচ্ছে। তাঁদের ম্যানেজমেন্টও খুব ভালো। অধিনায়ক ও ম্যানেজমেন্ট মিলে ভালো ভালো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কুলদীপকে আনা টার্নিং পয়েন্ট ছিল।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে হারের পর ভারতের এ জয় প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন শোয়েব। তবু ম্যাচ যে এতটা একপেশে হবে, তা ভাবতে পারেননি শোয়েব। তিনি বলেছেন, ‘তাদের জন্য শ্রীলঙ্কাকে হারানো জরুরি ছিল। কিন্তু আমার এটা জানা ছিল না, ওরা শ্রীলঙ্কাকে এভাবে মারবে যে ৫–১০ ওভারে ম্যাচ শেষ করে দেবে। আর এখান থেকে ভারত বিশ্বকাপের সবচেয়ে বিপজ্জনক দল হিসেবে খেলতে যাবে। কিন্তু আমি কাউকে খারিজ করতে চাই না। কারণ, উপমহাদেশের যত দল আছে, সবগুলোই বিপজ্জনক। শুভকামনা পাকিস্তানের জন্য। তবে ভালো সমন্বয় খুঁজে পাওয়াও জরুরি।’