শান্তি আলোচনার শর্ত হিসেবে ইউক্রেনের দেওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত নাকচ করে দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত রাশিয়া। তবে কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতির চিন্তাভাবনা করছে না মস্কো। কারণ, এ নিয়ে রাশিয়া ইতোমধ্যে ধোঁকা খেয়েছে।
গত শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার পর এক সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অধিবেশনে রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
এর আগে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধ বন্ধে ১০ দফা প্রস্তাব দেন। কিয়েভের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলেন লাভরভ বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। এটা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়; এটা বাস্তবসম্মত নয়। আর এটা সবাই বোঝে। আর এখন তারা (ইউক্রেন) বলছে, আলোচনার জন্য এটা মূল ভিত্তি।’
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ২০২২ সালের মার্চ ও এপ্রিলে সংলাপ হচ্ছিল, সবকিছুই ইতিমধ্যে শুরু হয়েছিল। কিন্তু দুই দিন পর বুচার ঘটনা ঘটল (ইউক্রেনের বুচা শহরে ইউক্রেনীয় ও রুশ বাহিনীর মধ্যে লড়াই)। কারণ, লন্ডন কিংবা ওয়াশিংটনের কেউ কেউ চায় না এই যুদ্ধ শেষ হোক।’
লাভরভ বলেন, ‘যে কারণে এখন আমরা সংলাপের কথা শুনলে, এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেওয়া অবস্থানের কথা তুলে ধরি। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, হ্যাঁ, আমরা সংলাপের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু আমরা যুদ্ধবিরতির কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করব না। কারণ, আমরা একবার বিবেচনা করেছিলাম, কিন্তু তোমরা (ইউক্রেন ও তাদের মিত্ররা) আমাদের ধোঁকা দিয়েছিলে।’
মস্কোর সঙ্গে সংলাপে বসতে পশ্চিমারা কিয়েভকে বাধা দিচ্ছে অভিযোগ করে লাভরভ বলেন, ‘আমরা শুধু প্রস্তুতই ছিলাম না, আমরা সংলাপের বিষয়ে সম্মত হই। ২০২২ সালের এপ্রিলে আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছাই। আমার যেটা মনে হয়, এরপর জেলেনস্কিকে বলা হলো—যেহেতু তারা এত দ্রুত রাজি হয়ে গেল, চলুন তাদের নিঃশেষ করে দিই।’
এ ছাড়া জাতিসংঘ কৃষ্ণসাগর দিয়ে আবারও শস্য রপ্তানি চালুর প্রস্তাব দিয়েছে। তবে জাতিসংঘের প্রস্তাবের বিষয়ে লাভরভের বক্তব্য, এটা মোটেও কার্যকর নয়। কারণ, পশ্চিমারা এর আগে মস্কোকে দেওয়া কোনো প্রতিশ্রুতি রাখেনি।