তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফেরত যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ভয়েস অব আমেরিকার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ভিডিও সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। ২৭ সেপ্টেম্বর (যুক্তরাষ্ট্র সময়) ওয়াশিংটন ডিসি-তে ভয়েস অফ আমেরিকার পক্ষ থেকে তার এই সাক্ষাৎকারটি নেন শতরূপা বড়ুয়া।
বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধীদলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনের দাবি করে আসছে। বলা হচ্ছে, সংবিধানে এর কোনো সুযোগ নেই। যেহেতু সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা বর্তমান সংসদে আপনাদের আছে, আপনারা কি সংবিধান সংশোধন করে বিরোধীদলের দাবি মেনে নেয়ার কোনো উদ্যোগের চিন্তাভাবনা বা তাদের সাথে এ বিষয়ে অন্তত কোনো আলোচনা করবেন?
এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যবস্থায় ফেরত যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেনই বা আমরা আলোচনা করবো?
৩৫ মিনিটের এ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি, তার দল ও সরকার যখন মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে দীর্ঘ লড়াই করে বাংলাদেশের জনগণের ভোটের অধিকার ও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করেছেন ও বাংলাদেশ যখন উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে তখন হঠাৎ কেন এ ধরনের স্যাংশন তা তিনি জানেন না।
প্রধানমন্ত্রী আরো দাবি করেন যে, বাংলাদেশেই এখন অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে, তাই ভিসা স্যাংশন এর ফলে যদি (বাংলাদেশিরা) আমেরিকাতে আসতে না পারে তাতে ‘কিছু যায় আসে না’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ দেশি বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলো তার সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে গুমের ঘটনার যে অভিযোগগুলো করেছে, সে ব্যাপারে তার সরকারের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন। সাক্ষাৎকারে তিনি সদ্য পাশ হওয়া সাইবার নিরাপত্তা আইনের যে ধারাগুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তারও জবাব দেন।
বিরোধীদলগুলোর বিশেষ করে প্রধান বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মামলা দায়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে অপরাধ করলে মামলা হবে।
‘রাজনৈতিক মামলায়’ সাজাপ্রাপ্ত প্রধান বিরোধী দলের অসুস্থ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমোদন দেয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ জন্য তাকে তার সাজা বর্তমানে স্থগিত করে বাড়িতে থাকার ও দেশে চিকিৎসা নেয়ার অনুমোদন যে এক সরকারি আদেশে বর্তমানে কার্যকর রয়েছে তা বাতিল করে, জেলে গিয়ে আদালতের কাছে আবেদন করতে হবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যবসান ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার সংকট নিয়েও তিনি প্রশ্নের উত্তর দেন।